রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সমপ্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, তারা সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে ব্রিটিশ রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল পার্টনার্স গভর্নেন্স–জিপিজির প্রতিনিধি দল। এ সময় চিলির সাবেক সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী জর্জিও জ্যাকসন সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো চাচ্ছে সংস্কার তাদের অধীনেই হোক, তাই তারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা সংস্কারের পরিবর্তে নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পড়া দেশগুলোতে রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় পরামর্শ দিয়ে থাকে জিপিজি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী তা জানতে চেয়েছে সফররত ব্রিটিশ রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জিপিজি। উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে প্রতিনিধি দল অন্তর্বর্তী সরকারকে সব রকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দায়িত্ব নিয়েছে। এটি একটি অভিনব ঘটনা যা এর আগে কখনো ঘটেনি। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এরকম হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আমরা এরকম পরিস্থিতিতে কাজ করার চেষ্টা করছি।
স্কটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য লর্ড জেরিমাই পুরভিস অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জ কী কী জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া এবং বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ স্থাপন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।
ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার মাট চার্টার কোন কোন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সাহায্য চায় জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং গণহত্যার বিচার বিষয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা এবং পরামর্শ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিকভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানকে অনেকেই ঠিকমত ব্যাখ্যা করতে পারছে না। কীভাবে এত অল্প সময় এত বড় এক স্বৈরশাসকের পতন হল তা মানুষ বুঝতে পারছে না। ফলে দেশের ভেতরে এবং বাইরে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়েও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এই আন্দোলন যে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান তা অনেকেই অস্বীকার করার চেষ্টা করছে।
নাহিদ বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার সংকট চলছে, মানুষ ভোট দিতে পারত না, কয়েক হাজার মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে। একটা দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে দেশের মানুষ ছিল। তাই মানবাধিকার রক্ষা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।