বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে অতি দ্রুত একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। সেই সরকার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো কালক্ষেপণ না করেই মুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার টানা ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পর রাতে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে গণভবনে যান ফখরুল ও বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর নেতারা। এই বৈঠক চলাচলে সেখানে যান সরকারি চাকরিতে কোটা ও পরে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে অসহযোগের ডাক দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। খবর বিডিনিউজের।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ফখরুল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। সেখানে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেবেন। এই সরকার আগামী তিন মাসের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত বিএনপি চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে গ্রেপ্তার করে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে আগামী দুয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তির ব্যবস্থা করবেন রাষ্ট্রপতি। এই (কোটা) আন্দোলনে যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের সবাইকে মুক্তি দেওয়া হবে। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যত মামলা হয়েছে তা তুলে নিয়ে তাকে মুক্তির দাবি জানিয়েছি প্রেসিডেন্টের কাছে।
মির্জা ফখরুল ছাড়াও তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান, দলের মজলিসে শুরার সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, জাকের পার্টির শামীম হায়দার, হেফাজতে ইসলামের মাহবুবুর রহমান, মামুনুল হক, মুফতি মনির কাসেমী, শেখ মো. মাসুদ, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকি, ফিরোজ আহমেদ, শাসনযন্ত্র আন্দোলনের সৈয়দ ফজলুল করিম, আশরাফুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুলও উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও বৈঠকে ছিলেন।
আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক নেতারা বঙ্গভবনে যাওয়ার পর সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হয়ে যান সংগঠনের সমন্বয়ক আরিফ তালুকদার, আব্দুল্লাহ আল হোসেন, মোবাশ্বেরা করিমও।