দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার প্রাথমিক খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন; যাতে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়কার সীমানাই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। গতকাল প্রকাশিত এ খসড়া নিয়ে ১৯ মার্চ পযন্ত দাবি ও আপত্তি জমা দেওয়ার সময় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের আবেদন পাওয়ার পর দাবি, আপত্তি, সুপারিশ বা মতামত নিয়ে শুনানির পর চূড়ান্ত সীমানা পুনঃনির্ধারণ করবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি। খবর বিডিনিউজের।
খসড়ায় দেখা গেছে, নতুন সিটি করপোরেশন হওয়ায় ময়মনসিংহ ৪ আসন, নতুন উপজেলা হিসেবে প্রশাসনিক এলাকার পুনর্বিন্যাস হওয়ায় মাদারীপুর ৩, সুনামগঞ্জ ১ ও ৩, সিলেট ১ ও ৩ এবং কক্সবাজার ৩ আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ পরিবর্তনকে শুধু ‘প্রশাসনিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
খসড়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, খসড়ায় আসনের কাঠামোগত কোনো রদবদল নেই। এতে আগের এলাকাগুলোকেই বিদ্যমান সংসদীয় সীমানার মধ্যে রাখা হয়েছে; বদল হয়েছে শুধু উপজেলার নাম কিংবা ওই এলাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যে ঢুকে গেছে। গতকাল ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে; যা গেজেট আকারেও প্রকাশ করা হবে। ইসির ওয়েবসাইটে সীমানার খসড়া প্রকাশ করে মতামত বা আপত্তি চাওয়া হয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী চলতি বছর ডিসেম্বর বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ধরে কাজ করছে ইসি। এর অংশ হিসেবে চলতি বছরের মাঝামাঝি পুনঃনির্ধারিত সীমানার গেজেট প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আবেদনের পর শুনানিতে বক্তব্য যৌক্তিক হলে মেনে নেব। যাই হোক না কেন জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করব।
পাঁচ বছর আগের সীমানা বহাল রেখেই প্রকাশ করা এ খসড়ায় ৩০০ আসনের নির্বাচনী এলাকার সীমানায় কাটছাঁট বা রদবদল হয়নি; পরিবর্তন এসেছে শুধু প্রশাসনিক বিন্যাসে। গতকাল নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, ২০১৮ সালে যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটাই অক্ষুণ্ন রয়েছে।
যে পাঁচ পদ্ধতি অনুসরণ : ১. প্রতি জেলার ২০১৮ সালের মোট আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা ২. প্রশাসনিক ইউনিট বিশেষ করে উপজেলা ও সিটি ওয়ার্ড যথাসম্ভব অখণ্ড রাখা ৩. ইউনিয়ন, পৌর ওয়ার্ড একাধিক সংসদীয় আসনের বিভাজন না করা ৪. নতুন প্রশাসনিক এলাকার যুক্ত, সম্প্রসারণ বা বিলুপ্ত হলে তা অন্তর্ভুক্ত করা এবং ৫. ভৌগলিক বৈশিষ্ঠ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রাখা।
সবশেষ জনশুমারিকে আমলে নেওয়ার বিধান থাকলেও চূড়ান্ত না হওয়ায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণে তা পুরোপুরি বিবেচনায় আনতে পারছে না ইসি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ষষ্ঠ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন ২০২২ সালের ২৭ জুলাই মাসে প্রকাশ করে। এতে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার বলে জানানো হয়।