লোহাগাড়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে প্রায় ২ শতাধিক সেগুন গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে চুনতি ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায় সাতগড় বনবিট কার্যালয়ের প্রায় শতাধিক গজ দূরত্ব থেকে এই গাছগুলো কাটা হয়েছে।
জানা যায়, সাতগড় বনবিট কার্যালয়ের কাছেই ফেরইত্যাঘোনা ও পার্শ্ববর্তী আলতাফের জুম এলাকা থেকে গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই গাছগুলো কাটা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে সেখানে সেগুন ও আকাশমনি গাছের বাগান সৃজন করা হয়েছিল। গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সাতগড় বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিকটস্থ এলাকা থেকে প্রায় ২ শতাধিক বড় সাইজের সেগুন গাছ কেটে নেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। মহাসড়ক থেকে সংরক্ষিত বনের ভেতর আনুমানিক ২০ গজ ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেছে নির্বিচারে কাটা অসংখ্য সেগুন গাছের মোথা। মহাসড়ক সন্নিহিত হওয়ায় গাছ কেটে নির্বিঘ্নে নিয়ে যেতে পেরেছে চোরেরা। মোথা দেখে মনে হয়েছে কয়েকদিন আগে গাছগুলো কাটা হয়েছে। কর্তনকৃত গাছের ডালপালার পাতাও শুকিয়ে গেছে। অনেক মোথা ডালপালা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এছাড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে দেখা গেছে অনেক আগে কাটা একাধিক ছোট–বড় গাছের মোথা।
স্থানীয়রা জানান, মহাসড়ক থেকে পায়ে হেঁটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশের কয়েকটি রাস্তা রয়েছে। মহাসড়কের পাশে ঘন গাছপালা থাকায় রাতের আঁধারে এই গাছগুলো কাটায় সময় কেউ দেখতে পাননি। গাছের মোথা ও ডালপালা দেখে গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই গাছগুলো কাটা হয়েছে, অন্যথায় বড় বড় এতো গাছ কেটে নেয়া কোনদিনও সম্ভব হবে না। এমনিতে চুনতিতে সংরক্ষিত এলাকায় দিন দিন গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ২ শতাধিক বড় সাইজের সেগুন গাছ কেটে নেয়ায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, রাতের আঁধারে ৪০–৫০টি সেগুন গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। কর্তনকৃত কিছু গাছ ও একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় পৃথক ৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে গাছ কাটার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
চুনতি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মহাসড়কের পাশে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে সেগুন গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছি। রাতের আঁধারে কেটে নেয়া কিছু গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।