সংবাদ সম্মেলনে লিটনের ক্ষোভ

শামীম হোসেনের বাদ পড়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লিটন কুমার দাসের ক্ষুব্ধ কণ্ঠ শোনা গেল। শামীম হোসেনের বাদ পড়া ও সেই প্রক্রিয়া নিয়ে অধিনায়ক যেভাবে উগড়ে দিলেন ক্ষোভ, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তা বিরল। লিটন সরাসরিই জানিয়ে দেন, শামীমকে বাদ দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই। তিনি বলেন, শামীম থাকলে অবশ্যই ভালো হতো। ইটস নট মাই কল, টোটালি সিলেক্টরস কল। আমি জানি না কেন। তবে নির্বাচকরা আমাকে কোন কিছু নোটিশ করা ছাড়াই শামীমকে বাদ দিয়ে দিয়েছে দল থেকে। উইদাউট এনি নোটিশ। আমি এতদিন জানতাম যে একটা দল যখন কেউ হ্যান্ডল করে, অন্তত অধিনায়ক জানে যে কোন ক্রিকেটার কখন দলে আসবে, কখন বাইরে যাবে। আমি আশা করি, বাংলাদেশের প্রত্যেক ক্রিকেটারই সেরা ক্রিকেটার। এইজন্যই জাতীয় দলে আছে। যে ১৫ জনকেই নেওয়া হোক না কেন, তারাই ভালো করবে। তবে শামীমকে বাদ দেওয়ার পেছনে কোনো কারণ আমি দেখি না। জানিও না, কেন বাদ পড়েছে সে। শামীমকে বাইরে পাঠিয়ে দলে নেওয়া হয়েছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। যদিও দুজনের ভূমিকা আলাদা। শামীম মূলত ফিনিশার। মাহিদুল গত বিপিএলে খুলনা টাইগার্সে ফিনিশারের ভূমিকায় খেলেছেন বটে। তবে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন জানিয়েছেন, তাকে নেওয়া হয়েছে চারপাঁচ নম্বরের জন্য, মিডল অর্ডারের ভাবনায়। শামীমকে বাদ দেওয়ায় আরেকটি সঙ্কটের জায়গাও তৈরি হয়েছে। পুরো মিডল অর্ডারে কোনো বাঁহাতি ব্যাটার নেই। লিটন আবার নির্বাচকদের দিকে তীর ছুড়ে জানালেন, আমার মনে হয় এটা আমাদের ভাবা উচিত। আপনার মাথায় এসেছে এই ব্যাপারটি। সিদ্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত যদি আমাদের ওপরর থেকে আসতো, খুব ভালো হতো। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনাকে ডানহাতিবাঁহাতি সমন্বয় করতে হবে। দেখা যাক এখন যে ক্রিকেটারগুলো দলে আছে, তারাই এই মুহূর্তে সেরা এবং আমি বিশ্বাস করি, যে কেউ বাংলাদেশ দলে আসবে, তারা সেরা। সেরা হয়েই এখানে আসছে। তারা ডেলিভার করার চেষ্টা করবে। দল নির্বাচনের আগে কোচ ও অধিনায়কের মতামত নেওয়াই প্রচলিত রীতি। বছরের পর বছর ধরে সেটাই হয়ে আসছে। লিটন বলেন, তাকে বলা হয়েছে অন্যরকম। আমাকে পুরোপুরি বলা হয়েছে, সিলেক্টর প্যানেল থেকে এবং বোর্ড থেকে আমাকে যে দলটা দেওয়া হবে, আমাকে সেই দলটা নিয়েই কাজ করতে হবে। এখানে আমার বলার কিছু থাকবে না যে, আমি কোন ক্রিকেটারকে চাই, কাকে চাই না। আমি এতদিন জানতাম, একটা মানুষ যখন অধিনায়ক, তার একটা দল গোছানোর একটা পরিকল্পনা থাকে। তবে সমপ্রতি কয়েকদিন থেকে জানতে পারলাম, যে দলটা আমাকে দেওয়া হবে, আমার কাজ হচ্ছে সেই দলটাকে নিয়েই মাঠে ভালো কিছু দেওয়া। আমার মনে হয়, কোচ এবং অধিনায়কের জানা উচিত দল নিয়ে। সেই জায়গা থেকে আমরা কিছুই জানি না। যদি বিশ্বকাপেও একই জিনিস ঘটে, আমাকে যে দলটা দেওয়া হবে, আমি সেই দল থেকেই চেষ্টা করব একাদশ খেলানোর। বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজে হঠাৎই এমন ঝড় বাংলাদেশের প্রস্তুতিতে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে। লিটন জানালেন,এই ঘটনা দলকে হয়তো ডিস্টার্ব করবে না। তবে এটা হতাশাজনক। আপনি প্রত্যেক ক্রিকেটারের কাছে প্রতি সিরিজে পারফরম্যান্স আশা করতে পারবেন না। আমরা চেষ্টা করেছি এতদিন ধরে দলটা গোছানোর জন্য। শামীম কিন্তু দুইতিনটা সিরিজে খুব ভালো অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে, যেটা আমাদের দরকার ছিল। সে ক্ষেত্রে বাদ পড়াটা শামীমের জন্য হতাশাজনক। অধিনায়ক হিসেবে আমিও, আমি সরি। আর কিছুই বলতে পারব না তাকে। কারণ আমি কখনোই আশা করি না, ১৫টা ক্রিকেটার প্রতিদিনই পারফর্ম করে দেবে। দুইতিনটা সিরিজে যখন পারফর্ম করবে না, তার পাশে আমার থাকা উচিত। আমি সত্যিই সরি যে, আমি তাকে ‘ব্যাক’ করতে পারিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রীলংকাকে উড়িয়ে টানা তৃতীয় জয় বাংলাদেশের
পরবর্তী নিবন্ধএস এ ফ্যামিলি স্পোর্টসকে হারিয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ফাইনালে