গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনো সংবাদ নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে আদালতে না এসে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রেস কাউন্সিলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে হাই কোর্ট। এক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে দায়মুক্তি সংক্রান্ত সাড়ে ৩ মাস আগে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দুদক আদালতের নজরে আনলে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট। খবর বিডিনিউজের।
ওই রুলের ধারাবাহিকতায় গতকাল বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানিতে আদালত দুদককে এ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রেস কাউন্সিলে করতে বলেছে। আদালতে একটি বাংলা দৈনিকের ওই প্রতিবেদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
গত বছর ২ মার্চ ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে দুদক তা নজরে আনলে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করে দুকের নথি তলব করে হাই কোর্ট। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককেও তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আদালতকে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুল শুনানিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘মাফিয়া জার্নালিজম’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানান দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
অন্যদিকে প্রতিবেদকের আইনজীবী সংবাদ মাধ্যমকে রাষ্ট্রের ‘চতুর্থ স্তম্ভ’ উল্লেখ করে সংবাদ মাধ্যমে স্বাধীনতা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, সূত্রের (সোর্স) গোপনীয়তা, সুরক্ষা নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি তুলে ধরে দুদকের আইনজীবীর আরজিতে আপত্তি জানান।
শুনানির এক পর্যায়ে দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, এটি আদালত অবমাননার মামলা নয়। আর সাংবাদিকের কোনো সংবাদের বিষয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে আগে প্রেস কাউন্সিলে যেতে হবে। তাছাড়া এ মামলায় সাংবাদিকের সংবাদের সোর্স আমরা জানতে চাইনি।
উভয় পক্ষের শুনানির পর আদালত স্বপ্রণোদিত রুল নিষ্পত্তি করে দায়মুক্তি দেওয়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের ওই অভিযোগ নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করে নতুন করে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেয়।