আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। গতকাল শনিবার বিকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে বিকাল থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী–পুরুষ জড়ো হতে শুরু করেন। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস–ট্রাক নিয়েও অংশ নেন অনেকে।
বিক্ষোভ সমাবেশটি চেরাগী পাহাড় মোড় ছড়িয়ে আন্দরকিল্লা, বৌদ্ধ মন্দির, জামালখান মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সমাবেশে বিভিন্ন সনাতনী সংগঠন জাতীয় পতাকার পাশাপাশি কালো পতাকা, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে আসেন। সমাবেশ থেকে ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার; তুমি কে, আমি কে বাঙালি বাঙালি; তুমি কে আমি কে, সনাতনী সনাতনী; আমার মাটি আমার মা, বাংলাদেশ ছাড়ব না; মঠ–মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই; আমার দেশ, সবার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ; আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না; সনাতনীদের লড়াই থামবে না, থামবে না; আর নয় প্রতিবাদ এবার নেবো প্রতিশোধ’ এ ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না হলে সামনে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আশীষ দে নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর যেভাবে অত্যাচার–নিপীড়নসহ মন্দির ভাঙচুর করা হয়, এটার প্রতিবাদ জানানোর জন্যই আমরা আজকে এখানে একত্রিত হয়েছি। বিভিন্ন স্থানে মন্দির, প্রতীমা, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অনেককে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এতে আমরা শঙ্কার মধ্যে আছি। আমরা দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান চাই। সমাবেশ থেকে সনাতনী সংগঠনের নেতারা চারটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে, সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থাপনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরেও হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।