২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সংকট অবশেষে ঘুচেছে। করোনাকালীন আইসিইউ’র সেবা দিয়ে আলোচনা আসা এই সরকারি হাসপাতালটিতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ১৮টি আইসিইউ বেডের ১৮টি কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের যন্ত্র (ভেন্টিলেটর) এক পর্যায়ে বিকল হয়ে পড়ে। ফলে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট এক পর্যায়ে হাই ডিফেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রূপান্তরিত হয়। তবে কয়েক মাস আগে বিকল হওয়া ভেন্টিলেটরগুলো মেরামতে নজর দেয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ১০টি ভেন্টিলেটর সচল করা হয়। ফলে মূর্মুর্ষু রোগীরা এখন আইসিইউ’র সেবা পাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে কখনো পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেবা দেয়ার মতো যন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিল না। পূর্ণাঙ্গ রোগীকে আইসিইউ সেবা দেয়ার জন্য সমন্বিত চিকিৎসা দরকার। জেনারেল হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগ, নেফ্রোলজি বিভাগ ও নিউরোলজি বিভাগ নেই। এখন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একজন রোগী যদি আইসিইউ’তে ভর্তি করানো হয়, এক্ষেত্রে তার পরিপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার। আবার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কেউ যদি আইসিইউ’তে ভর্তি হন, তবে একজন নিউরোলজিস্ট বা নিউরো সার্জারির চিকিৎসক দরকার। এছাড়া আইসিইউ’র অভ্যন্তরে কিডনি রোগীর জন্য ডায়ালাইসিস মেশিন থাকতে হয়, এখন আমাদের তো নেফ্রোলজি বিভাগ নাই। তাই আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে আইসিইউ’র পূর্ণাঙ্গ সেবা শুরু থেকেই আমরা দিতে পারতাম না।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত ২০২০ সালে ১৮ শয্যার আইসিইউ বিভাগ চালু করা হয়। আইসিইউ শয্যার জন্য ১৮টি ভেন্টিলেটর ছিল। এরমধ্যে বর্তমানে ১০ ভেন্টিলেটর চালু করা হয়েছে। এছাড়া ৩৩টি বাইপাইপের মধ্যে সচল রয়েছে তিনটি এবং নতুন করে আরো ৫টি বাইপাইপ মেশিন কেনা হয়েছে। অপরদিকে ৩৯টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলার মধ্যে এখন সচল রয়েছে ১০টি। অন্যদিক বর্তমানে ৭ জন অ্যানেস্থেশিয়া কনসালটেন্ট দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। এদের মধ্যে ৫ জন আবার সংযুক্তিতে আছেন। কনসালটেন্টদের আইসিইউ সেবা ছাড়াও অপারেশনের রোগীদের অ্যানেস্থেশিয়া দেয়ার কাজও করতে হয়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিয়া ও আইসিইউ ইউনিটের কনসালটেন্ট ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের আইসিইউ ইউনিটের সক্ষমতা এখন বেড়েছে। আগে যে সংকট ছিল, সেটি এখন আর নেই। বর্তমানে ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর পুরোপুরি সচল রয়েছে। ফলে আমাদের আগে যে সংকট ছিল, সেটি কেটে গেছে বলা যায়। আমাদের মোট ১৮টি আইসিইউ বেড থাকলেও সরকারের নির্দেশনা মতে, আমরা ৮টি বেড আলাদা করে রেখেছি। এসব বেডগুলো আইসোলেটেড রোগীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিশেষ করে এগুলো এক সময় করোনা রোগীদের জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছিল। সেই নির্দেশনা এখনো তুলে নেয়া হয়নি। তবে যে ১০ বেড চালু রয়েছে, সেগুলোতে আমরা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছি।








