শ্রুতিলেখক জটিলতায় সাত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সাদা খাতা জমা

আজাদী প্রতিবেদন  | শুক্রবার , ১১ এপ্রিল, ২০২৫ at ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ

শ্রুতিলেখক জটিলতায় চট্টগ্রাম নগরের রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাতজন এসএসসি পরীক্ষার্থী সাদা খাতা জমা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিন নগরের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এদিন বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা ছিল।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা হলো, হাবিবুল হক রাতুল, মিনহাজ উদ্দিন, মারুফুর রহমান, রূপসা কানম, অপু দত্ত, লাকী আক্তার ও খায়রুল ইসলাম। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা যায়, নিয়মানুযায়ী এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী শ্রুতিলেখক হতে হবে। কিন্তু ওই সাতজন পরীক্ষার্থী যাদের শ্রুতিলেখক হিসেবে উপস্থাপন করেছে তারা কেউ অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া নয়। তাদের কেউ কেউ উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী বলেও বোর্ড জানতে পেরেছে। তবু বোর্ড কর্তৃপক্ষ মানবিক বিবেচনায় পরীক্ষার আগের রাত বুধবার ৮টা পর্যন্ত নিয়মনুযায়ী শ্রুতিলেখক আনার সময় বেঁধে দেয়। কিন্তু সেটা হয়নি।

এ ঘটনার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড উভয়ের প্রতি অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ওই শিক্ষার্থীদের গাইড টিউটর সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সমন্বয়ক আব্দুস সামাদ। তিনি বলেন, শ্রুতিলেখক নির্ধারণ এবং অনুমোদনের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় এমন দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মূলত স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতার কারণে শ্রুতিলেখক পাইনি। তিনি শ্রুতিলেখকদের অনুমোদনের আবেদন বোর্ডে পাঠাননি। তাই গত তিনদিন ধরে আমরা বোর্ডের শরণাপন্ন হয়েছি। পরে স্কুল থেকে অনুমতি পাচ্ছিনা দেখে কাল বোর্ডে আসি। শ্রুতিলেখক হিসেবে যাদের নিয়ে গেছে তারা নবমদশম শ্রেণির ছাত্র। চাইলেই মানবিক কারণে বোর্ড অনুমতি দিতে পারতো। কিন্তু বোর্ড সেটা করেনি।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, পরীক্ষার্থীরা বুধবার ৭ জন শ্রুতিলেখক নিয়ে এসেছে। তখন আমরা তাদের কাছ থেকে শ্রুতিলেখক হিসেবে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সম্মতি ও স্কুল প্রধানের অনুমতির প্রত্যয়নপত্র চাই। কিন্তু তারা যে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এসেছে, সেখানে দেখি যে একই হাতের লেখা, শিক্ষার্থীদের বাবা বা মায়ের পক্ষে লেখা সাতজনের প্রত্যয়ন একইজনের। পরে যেই স্কুল থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এসেছে সেই স্কুলপ্রধানকে ডেকে আনলে তিনি জেরার মুখে স্বীকার করেন তিনি মানবিক কারণে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া না হওয়ার পরেও প্রত্যয়ন করেছেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, এর পরের পরীক্ষা আগামী ১৫ এপ্রিল। এর মধ্যে তারা যদি অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শ্রুতিলেখক নিয়ে আসেন, আমরা অনুমোদন দিয়ে দিবো যাতে বাকি পরীক্ষায় এই বাচ্চারা অংশ নিতে পারে।

এ বিষয়ে রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জেবুন নিছা খানম বলেন, ওরা শুরু থেকে আমাদের জানিয়েছে ক্লাস এইটের বাচ্চা ঠিক করেছে। কিন্তু আমাদের সামনে আনেনি। আমরা বারবার বলার পরেও তারা আনেনি। শেষে অনার্সের বাচ্চা নিয়ে আসছে অষ্টম শ্রেণির বলে। কিন্তু আমি যাচাইবাছাই করে দেখি কলেজের ছেলে তাই অনুমোদন দেইনি। কাল (বুধবার) রাতের ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি তাও তারা অষ্টম শ্রেণির বাচ্চা আনেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাসানচর কার? জানা যাবে ১৫ দিনের মধ্যে
পরবর্তী নিবন্ধভর মৌসুমে বন্ধ হচ্ছে গলদা চিংড়ি শিকার