দেশব্যাপী চলমান কারফিউ শিথিল হওয়ার প্রভাবে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই–খাতুনগঞ্জে ব্যবসা বাণিজ্যের স্থবিরতা কেটে গেছে। শ্রমিকদের হাঁকডাকে এখন আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে প্রাচীন বাজারটি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েকদিন আগে দেশব্যাপী সংঘাত–সহিংসতার কারণে সরকার কারফিউ জারি করে। তবে পরিস্থিতি উন্নতির সাথে সাথে সরকার কারফিউ শিথিল করে। এতে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়ে উঠে। গতকাল বিকেলে সরেজমিনে চাক্তাই–খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের মূল সড়কের দুই পাশে ট্রাক কাভার্ডভ্যানের দীর্ঘ সারি। এসব ট্রাক–কাভার্ডভ্যান থেকে পণ্য লোড আনলোডে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকেরা। এছাড়া বিভিন্ন আড়তের কর্মচারীদের যেন দম ফেলার ফুসরত নাই। অপরদিকে মধ্যম চাক্তাইয়ের পেঁয়াজের আড়ত চালপট্টি এবং আবদুস সোবহান রোড এলাকার চালের আড়তগুলোতেও বেড়েছে ব্যস্ততা। অনেক ক্রেতা ঝুঁকি নিয়ে পণ্য পরিবহন করেননি। তাই পেঁয়াজ ও চালের আড়তগুলোতে এখন চলছে জমজমাট বেচাবিক্রি।
চট্টগ্রাম রাইচ মিলস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ বলেন, আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য বলা যায় আজ (গতকাল) থেকে অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। দূর দূরান্তে আমরা এখন পণ্য পাঠাতে পারছি। এ ক’দিন ধরে আমরা এক ধরণের আমাদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক ছিল, সেটি এখন চলে গেছি। এখন পণ্য পরিবহন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক আছে।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, আজ (গতকাল) থেকে চাক্তাইয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ক্রেতারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। আমরাও তাদের চাহিদা মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছি। আমরা দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চেয়েছি, অবশেষে সেটি সম্ভব হওয়ায় খুব ভালো লাগছে। পাশাপাশি সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, সত্যি কথা বলেতে গেলে কারফিউ জারির পর থেকে আমরা আতঙ্কে ছিলাম। কারণ চাক্তাই খাতুনগঞ্জে এমনিতে ব্যবসা বাণিজ্যে খারাপ যাচ্ছিল। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সরকার কারফিউ শিথিল করে। ফলে পুনরায় আমরা আগের মতো ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারছি। আমাদের চাক্তাই খাতুনগঞ্জে এখন রাত দিন পণ্য লোড আনলোড হচ্ছে। বেচাবিক্রিও অনেক বেড়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে দেশব্যাপী কারফিউ জারির পর থেকে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে ব্যবস্থা বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দেয়। ভেঙ্গে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকে লেনদেনও করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন দোকান আড়ত খুললেও একপ্রকার অলস সময় করতে হয় মালিক–কর্মচারীদের। তবে অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।