হরেকরকমের পাখির বিচরণ, কিচিরমিচির শব্দ, দুটি ঝুলন্ত ব্রিজ, বেশ কয়েকটি লেক; সবই আছে বাঁশখালী ইকোপার্কে। এসব খুব সহজে আকৃষ্ট করে যেকোনো পর্যটককে। বিশাল পাহাড়জুড়ে সবুজে ঘেরা এ পার্ক পরিবার নিয়ে ভালো সময় কাটানোর জন্য সুন্দর স্থান। এছাড়া এখানে রয়েছে তিনটি পর্যটন টাওয়ার। সেগুলো থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য যেন চোখের আরাম। প্রতিনিয়ত পর্যটকের পদচারণায় মুখর থাকা এ পার্ক এখন ভুগছে নানা সংকটে। মূলত করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় পার্কে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। তখন থেকে স্থবির হয়ে যায় পার্কের নিয়মিত উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ। ফলে পার্কের অধিকাংশ স্থাপনা বর্তমানে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। শেওলায় ভরে গেছে লেক। এতে করে দিনদিন এ পার্ক বিমুখ হচ্ছেন পর্যটকরা। এছাড়া পার্কে আসার একমাত্র সড়কের শীলকূপ মনছুরিয়া বাজার থেকে ২-৩ কিলোমিটারের বেশ কয়েক জায়গায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এ সড়ক দিয়ে বড় কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। নানা সময় দুর্ঘটনার কবলেও পড়তে হচ্ছে এসব গাড়িকে। সবমিলিয়ে দিনদিন জৌলুশ হারাচ্ছে বাঁশখালীর বৃহৎ এ পার্ক।
পার্কে ঘুরতে আসা একাধিক পর্যটক সরকার ও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করে জানান, পার্কের স্থাপনাগুলো সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনে কাজ করলে ভ্রমণপিপাসুরা আরও বেশি বেশি আসবেন। এ সময় তারা একমাত্র সড়কটির দ্রুত সংস্কার ও এটি আরও প্রশস্ত করার দাবি জানান।
শীলকূপ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কায়েস সরোয়ার সুমন বলেন, পার্কে আসা পর্যটকদের সকল ধরনের নিরাপত্তাসহ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এলাকাবাসী বন্ধ পরিকর। তবে দীর্ঘ সময় ধরে পার্কের স্থাপনাগুলো সংস্কারহীন। এগুলো এখন সংস্কার করা জরুরি। তিনি বলেন, পার্কের একমাত্র সড়কটিও অনেকদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি, ফলে এটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি এসব উন্নয়নে স্থানীয় সাংসদ ও বনবিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুজ্জমান শেখ বলেন, প্রকৃতি সমৃদ্ধ এ ইকোপার্ক এলাকা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না এর বিশালতা। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় পার্কে প্রবেশ বন্ধ থাকায় অনেক স্থাপনা জরাজীর্ণ হয়েছে। এই স্পটটি যথাযথভাবে আরো বেশি উন্নয়ন ও পর্যটন উপযোগী করা প্রয়োজন। তাতে করে সরকার আরো বেশি রাজস্ব পাবে। তিনি জানান, বর্তমানে পার্কের উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হলে পার্কটি পূর্বের অবস্থা ফিরে পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পার্কটিকে আরো বেশি পর্যটনমুখী করার জন্য বনবিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের নানাভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তাতে করে সরকার অনেক রাজস্ব পাবে ও সাধারণ জনগণ বিনোদনের একটা মনোরম স্থান পাবে।
স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ইকোপার্কের উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। এ পার্কের উন্নয়নে সকল ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন বলেও জানান।