শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তথা বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। আজ থেকে ২৫৬৮ বুদ্ধাব্দ আগে এ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে মহাকারুনিক গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিজ্ঞান বা বুদ্ধত্বলাভ এবং মহাপরিনির্বাণ অর্থাৎ মহাপ্রয়াণ করেন। যা পৃথিবীতে অতি বিরল ঘটনা। এ ত্রি–স্মৃতি বিজড়িত নিয়ে বৈশাখী পূর্ণিমা। মহামানব সিদ্ধার্থ নেপালের কপিলাবস্ত ও দেবদহ রাজ্যের মধ্যবর্তী স্থান লুম্বিনীর শালবন বা উদ্যানে রাজা শুদ্ধোধন রাণী মহামায়ার ঔরসে জন্ম গ্রহণ করেন। ভারতের বুদ্ধগয়ায় বোধিবৃক্ষমূলে বুদ্ধত্ব লাভ করেন এবং কুশীনগর মল্লদের শালবনে যমক শালবৃক্ষমূলে গৌতম বুদ্ধ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে পরিনির্বাণ লাভ করেন। মানব জীবনে অপরিহার্য ও অখণ্ডনীয় জন্ম, দুঃখ, ব্যাধি দুঃখ ও মৃত্যু দুঃখের কারণ উদঘাটন এবং অন্বেষণে সত্যের অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৬ বছর কঠোর ধ্যান সাধনায় পরম সত্যজ্ঞান লাভ করেন। তাইতো বুদ্ধ পৃথিবীর সকল প্রাণী বা মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন, শান্তির কথা বলেছেন। বুদ্ধ জাতিভেদের উর্ধ্বে ছিলেন। বুদ্ধ বৌদ্ধদের কাছে নয় শুধু অবৌদ্ধদের কাছেও একজন ঐতিহাসিক মহাপুরুষ। মিথ্যাকে সত্য দ্বারা জয় করে আত্মশুদ্ধচিত্তে ব্রতী হওয়ার কথা বলেছেন। মহাকারুনিক সম্যক সম্বুদ্ধ অহিংসা সাম্য, মৈত্রী, করুণাধারায় সিক্ত হয়ে পৃথিবীর সমস্ত জীবের প্রতি সুখ শান্তি কামনা করেছিলেন এবং মানবের মুক্তি পথ প্রদর্শন করে গেছেন। এই অশান্ত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক বুদ্ধের অহিংসা বাণী। বুদ্ধের অমিয়বাণী জাতি ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকের মন বিকশিত হোক সুগন্ধ ফুলের মত। সবার মাঝে জেগে উঠুক মানবতার মহানবাণী। সমস্ত গ্লানিমলিনতা হিংসা ও রেশারেশি ভুলে গিয়ে ঐক্য সংহতি সৌহার্দ্য সমপ্রীতি সৌভ্রাতৃত্ববোধ। নব চেতনায় উজ্জীবিত হবে মহাশান্তির অমিয়ধারা প্রবাহিত হয়ে বিশ্ব কলংককূন্য হোক এই প্রত্যাশা করি। সকলের প্রতি বুদ্ধ পূর্ণিমার মৈত্রীময় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন সহ সকল প্রাণী সুখী হোক।