শুধু ভালোবাসার দিন আজ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:০১ পূর্বাহ্ণ

দোহাই তোদের, একটুকু চুপ কর

ভালোবাসিবারে দে আমারে অবসর’

আজ আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসার দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ঋতুরাজ বসন্তের রঙের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠার দিন। বিশ্ব ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন শুরু হয়েছে গত বেশ কয়েকবছর ধরে। এই দিনে উচ্ছ্বসিত হয় অগুনতি তরুণতরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ। দিনটি বছর কয়েক আগেও এদেশে অপরিচিত ছিল। ছিল পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুষঙ্গ। কিন্তু দিনে দিনে ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস বাঙালির জীবনেও জড়িয়ে গেছে। এই দিনে ভালোবাসা যেন নতুন রূপে নতুন সাজে নতুন মেজাজ পায়।

ভ্যালেন্টাইনস ডে শুধুমাত্র প্রেমিক প্রেমিকা বা স্বামীস্ত্রীর জন্য নয়। এটি ভালোবাসা দিবস। এই ভালোবাসা মানেই মাকে ভালোবাসা, এই ভালোবাসা মানে বাবাকে ভালোবাসা। ভাইবোন, প্রিয় সন্তান, প্রিয় বন্ধুসহ সব প্রিয়জনের সাথেই এই দিনে ভালোবাসা বিলানো যায়।

ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদ, ওয়েল পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ফুলের দোকানগুলোতে শুরু হয়েছে বিকিকিনি। দিনভর ঘোরাঘুরি, খাওয়াদাওয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। হাতে এবং খোঁপায় ফুল গুজে লাল, নীল, সাদা, বেগুনি, গোলাপিসহ নানা রঙের পোশাকে সজ্জিত হয়ে আজ রাজপথ থেকে অলিগলিতে রচিত হবে ভালোবাসা দিবসের জয়গান।

বহু প্রাচীন দুটি রোমান প্রথাকে ভিত্তি করে ভ্যালেন্টাইনস ডে উৎসবের সূত্রপাত বলে জানা যায়। এরমধ্যে প্রথমটি হলো, এক খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেনটাইনের নামানুসারে দিনটির নাম ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ করা হয়। ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রোমান সম্রাট গথিকাস আহত সেনাদের চিকিৎসার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুর আগে ফাদার ভ্যালেনটাইন তার আদরের একমাত্র মেয়েকে একটি ছোট্ট চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি নাম সই করেছিলেন ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেনটাইন’। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মেয়ে এবং তার প্রেমিক মিলে পরের বছর থেকে বাবার মৃত্যুর দিনটিকে ভ্যালেনটাইনস ডে হিসেবে পালন করা শুরু করেন। যুদ্ধে আহত মানুষকে সেবার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে ভালোবেসে দিনটি বিশেষভাবে পালন করার রীতি ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

ভ্যালেনটাইনস ডে সর্বজনীন হয়ে ওঠে আরও বেশ পরে ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে অপর একটি প্রথা দিনটিকে আরো বেশ গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মৃত্যুর আগে প্রতি বছর রোমানরা ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘জুনো’ উৎসব নামের একটি উৎসব পালন করতো। রোমান পুরানে বিয়ে ও সন্তানের দেবী জুনোর নামানুসারে এর নামকরণ। এ দিন অবিবাহিত তরুণেরা কাগজে নাম লিখে লটারির মাধ্যমে তার নাচের সঙ্গীকে বেছে নিত। ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রোমানরা যখন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীতে পরিণত হয় তখন ‘জুনো’ উৎসব আর সেন্ট ভ্যালেনটাইনের আত্মত্যাগের দিনটিকে একই সূত্রে গেঁথে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ হিসেবে উদযাপন শুরু করে। দিনে দিনে এটির প্রসার এবং প্রচার বাড়তে থাকে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে
পরবর্তী নিবন্ধদিন দিন তীব্রতর হতে থাকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন