তার ‘মূল পেশা’ চুরি করা। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে রাতে চুরি করেন তিনি। নাম তার শাহআলম। চুরির টাকার কিছু অংশ শিশুদের দিয়ে বাকি টাকায় মাদক সেবন করেন তিনি। নগরীর বাকলিয়া চর চাক্তাই এলাকার একটি বাসায় চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে পুলিশ শাহ আলমের সন্ধান পায়। গতকাল বুধবার ভোররাতে তুলাতলী বালুরমাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪০ বছর বয়সী শাহ আলম ও ১৪ বছর বয়সী দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে। শাহআলম বাকলিয়া এলাকার তুলাতলী বালুর মাঠ এলাকায় থাকেন।
বাকলিয়া থানার ওসি আফতাব হোসাইন বলেন, গত সোমবার চর চাক্তাই আবু জাফর রোডের একটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। বাসাটি থেকে প্রায় ৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও বিভিন্ন ব্যাংকের এফডিআরের কাগজপত্র চুরি হয়। অভিযোগ পেয়ে বাকলিয়া থানা পুলিশের একটি দল তদন্তে নেমে শাহ আলম ও দুই কিশোরসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে চুরি করা মালামাল উদ্ধার করে। ওসি বলেন, যে বাসাটিতে চুরি হয়েছে সে বাসার গৃহকর্তা পরিবার নিয়ে ওমরাহ করতে সৌদি আরব গেছেন। একই ভবনে গৃহকর্তার চাচা থাকায় তার কাছে বাসার চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন। সোমবার সকালে গৃহকর্তার চাচা বাসায় গিয়ে মূল দরজা খোলা দেখে ঘরে ঢুকে চুরির বিষয়টি টের পান।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ভবনের গেইট খোলা পেয়ে রোববার রাতে চোরের দল প্রবেশ করে। রাতে ওই বাসার দরজার তালা ভেঙে তারা প্রবেশ করে এবং আলমারি ভেঙে স্বর্ণালঙ্কার, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ৩১ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজপত্র এবং নগদ ৭৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
পুলিশ কর্মকর্তা আফতাব বলেন, শাহ আলম চুরির মূল হোতা। বাসাটিতে চুরির পর শাহ আলম নিজের বাসায় ব্যাংকের বিভিন্ন কাগজপত্র ও নগদ টাকা রেখে স্বর্ণালঙ্কারগুলো দুই কিশোরকে বিক্রি করতে দেন। দুই কিশোর বাকলিয়া এলাকার বিভিন্ন দোকানে স্বর্ণালঙ্কারগুলো বিক্রির চেষ্টা করে বলে জানতে পারে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত থেকে টানা অভিযান চালিয়ে দুই কিশোরের কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কারগুলো উদ্ধার করা হয়। পরে শাহ আলমের বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যাংকের কাগজপত্রগুলো উদ্ধার করা হয়।
বাকলিয়া থানার ওসি আফতাব হোসাইন বলেন, বছর দশেক আগে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে এসে নগরীতে দিনের বেলায় রিকশা চালানো শুরু করেন শাহ আলম। ‘মাদকাসক্ত’ শাহ আলম রাতে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে চুরি করেন। ওসি বলেন, গ্রেপ্তার দুই কিশোরের এক জনের বাবা শাহ আলমের সঙ্গে রিকশা চালাতেন। সেই সুবাদে পরিচয়। কিশোরটির বাবার মৃত্যুর পরও শাহ আলম তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ওই কিশোরের মাধ্যমে মূলত চুরিতে অন্য শিশুদেরকে যুক্ত করেন। তারা চুরির মালামাল বিক্রি করে শাহ আলমকে টাকা বুঝিয়ে দেয়।