আগের দিন সোমবার ফটিকছড়ি উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক তোহার। আর পরদিন বোয়ালখালী উপজেলায় আরেক তোহার মৃত্যু হয়েছে। তবে কারণটা ভিন্ন। ছোট্ট তোহা (৯) পড়ে চতুর্থ শ্রেণীতে। সোমবার রাতে সে এই পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেল। তার মৃত্যু নিয়ে কয়েক রকম কথা শোনা যাচ্ছে। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া চাচা নিজেকে পরিচয় দিলেন বাবা আর বললেন, ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে। স্থানীয়রা বললেন, ও আত্মহত্যা করেছে। ওমান প্রবাসী পিতা মেয়ের মৃত্যুর খবরে দেশে এসেছেন। মেয়েকে তিনি ডাকতেন পরিমণি। তার পরিমণির মৃত্যু কীভাবে সেই বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। পুলিশ বলল, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
গত সোমবার রাত ৯টার দিকে বোয়ালখালী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সমশু সওদাগরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুনতাহা আলম তোহা ওমান প্রবাসী মাহবুবুল আলমের মেয়ে। তিনি এক ছেলে ও একটি মেয়ের জনক। সে ওই এলাকায় সেবা খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
তোহার বাবা মাহবুবুল আলম ওমানে ছিলেন। মেয়ের মৃত্যুর খবরে গতকাল সকালে দেশে এসেছেন। তিনি বলেন, তোহা মোবাইলে ভারতীয় বাংলা নাটক ও ক্রাইম পেট্রোল বেশি দেখত। এসব নাটকে ফাঁসির দৃশ্য দেখে হয়ত সেটা করার চেষ্টা করেছে। করতে গিয়ে হয়ত এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে আমি নিশ্চিত নই।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়ের চাচা মেয়েকে নিয়ে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে যাওয়ার সময় আমি দেখতে পাই সে আর বেঁচে নেই। তারপরও সে স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তোহা কীভাবে মারা গেল চিকিৎসক জানতে চাইলে মেয়ের চাচা আবুল কালাম নিজেকে মেয়ের বাবা পরিচয় দিয়ে বলেন, বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গেছে।
তবে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তোহা রুমে উড়না বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে সে ওমান প্রবাসী বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল।
লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা বোয়ালখালী থানার উপপরিদর্শক সাইদুল ইসলাম বলেন, শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। তবে ফাঁস লাগানোর কারণে গলায় দাগ পাওয়া গেছে।
বোয়ালখালী থানার ওসি আছহাব উদ্দীন বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।