সীতাকুণ্ডে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে এক শিশুকে রক্ষা করল স্থানীয় এক মহিলা মেম্বারসহ স্থানীয়রা। মানসিক প্রতিবন্ধী মা তার শিশু সন্তানকে কুমিরা আলেকদিয়া সাগরের তীরবর্তী এলাকার একটি গ্রাম্য পুকুরে ডুবিয়ে মারার সময় ওই এলাকায় মহিলা মেম্বার ও স্থানীয়রা শিশুটিকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট খুলনা বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানাধীন মিস্ত্রিভাঙ্গা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ উমর আলীর স্ত্রী মরিয়ম তার ২ বছরের ছেলে আহাদ তালুকদারকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’স লেক এলাকায় বসবাসরত মায়ের বাসায় চলে আসেন। ওখানে তিনদিন অবস্থান করার পর ৩০ আগস্ট তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি শিশু ছেলেটিকে নিয়ে কুমিরা আলোকদিয়া সাগর উপকূলে চলে যান। সেখানে গিয়ে ছেলেকে সাগর উপকূলে গ্রামের একটি পুকুরের পানিতে একাধিকবার ডুবাতে থাকেন। বিষয়টি স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে ওই এলাকার মহিলা মেম্বার ফাতেমা আক্তারকে জানালে তিনি পুলিশে খবর দেন এবং তাৎক্ষণিক শিশুটিকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং শিশুটিকে এবং তার মাকে থানায় নিয়ে যান। এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিনের স্ত্রী সেলিনা আক্তারের থানায় এসে হাজির হন এবং শিশুটিকে জিম্মায় নেন। সেলিনা আক্তার ১ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে রাখেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন শিশুটি ও মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে গতকাল সোমবার দুপুরে শিশুটির বাবা এবং নানীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে হাজির হন। এরপর সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফুন্নেছা বেগম সবাইকে নিয়ে এবং তাদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফখরুল ইসলামের কাছে সবাইকে নিয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফখরুল ইসলাম সম্পূর্ণ কাগজপত্র যাচাই–বাছাই করার পর থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে পিতার কাছে শিশুটিকে বুঝিয়ে দেন।
ইউএনও বলেন, আমরা যাচাই–বাছাই করার পর শিশুটিকে বাবার কাছে শেষ পর্যন্ত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে শিশুটিকে তার পিতার কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন এতদিন পর্যন্ত লালন পালন করা কুমিরা আলেকদিয়ার বাসিন্দা সেলিনা আক্তার। তিনি বলেন, শিশুটিকে পেয়ে আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম। তাকে নিজের সন্তানের থেকেও বেশি আদর–যত্ন করেছি।












