নগরীর আকবরশাহতে ৬ বছরের শিশুকন্যা ধর্ষণের শিকার হয়নি। তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। ধর্ষণ চেষ্টাকারী ঘটনার সময় গ্রেপ্তার নির্মল চন্দ্র আইচ নয়, ওই সময়ে বায়েজিদ এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বেলাল হোসেনই। গত বছরের ২৩ নভেম্বর অধিকতর তদন্ত শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এ দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমনটায় উল্লেখ করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক প্রিটন সরকার। থানা পুলিশের মতো ডিবি পুলিশও প্রভাবিত হয়ে এ রিপোর্ট দিয়েছে, এমনটা উল্লেখ করে সে সময় বাদী পক্ষ আদালতে নারাজি পিটিশন দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি আংশিক শুনানিও হয়েছিল। গতকাল সোমবার পূর্নাঙ্গ শুনানি ও আদেশ হয়। যেখানে আদালত (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪) বাদী পক্ষের নারাজি পিটিশন গ্রহণ করেন এবং ডিবি পুলিশের দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেন। এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান আজাদীকে বলেন, আদালত ডিবি পুলিশর উক্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে আসামি নির্মল চন্দ্র আইচের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। আগামী ৪ এপ্রিল চার্জগঠনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর ডিবির পরিদর্শক প্রিটন সরকারের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনা পরবর্তী গ্রেপ্তার নির্মল চন্দ্র আইচের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করার মতো কোনোরূপ সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ডিএনএ রিপোর্টেও সুস্পষ্টভাবে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। প্রকৃতপক্ষে ছয় বছরের ওই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল বন্দুকযুদ্ধে নিহত বেলাল হোসেন।
২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আগের তদন্ত কর্মকর্তা ও আকবরশাহ থানার এসআই বিকাশ চন্দ্র শীল আদালতে দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ৪ মে ভিকটিম শিশুকে আকবরশাহর বেলতলী ঘোনার ফারুক চৌধুরী মাঠের পাশের অগ্রণী হাউজিং মাঠের পার্শ্ববর্তী স্থানে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছিল। কাজটি করে বেলাল হোসেন।
আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান বলেন, নির্মল চন্দ্র আইচকে আসামি করে মামলা হয়েছিল। ঘটনার পরপর তাকে আটক করে পুলিশের কাছেও দেয়া হয়। কিন্তু তখন পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বেলাল হোসেনকে সামনে নিয়ে আসে পুলিশ। বলা হয়, বেলাল হোসেনই উক্ত শিশুকে ধর্ষণ করে। তাদের যুক্তি ছিল, ভিকটিম শিশু বেলালকে ধর্ষক হিসেবে শনাক্ত করে। যদিও ২২ ধারায় নির্মল আইচের নাম বলে আদালতে জবানবন্দি দেয় শিশুটি।
তিনি আরো বলেন, থানা পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে তখন নারাজি পিটিশন দাখিল করেন শিশুর পিতা। আদালত সেটি গ্রহণ করে ডিবিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ডিবি পুলিশও একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।