শিশির কণায় শীতের ছন্দ

শ্রীধর দত্ত | বৃহস্পতিবার , ১০ নভেম্বর, ২০২২ at ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

শরতের নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা কাশফুলের নরম ছোঁয়া শিউলি ফুলের মন মাতানো সুবাস শেষে এসেছে হেমন্তকাল। কার্তিক অগ্রহায়ণ দুই মাস হেমন্তকাল। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ পর্যায়ক্রমে দুঃখের পরে আসে সুখ। কার্তিক মাসকে গ্রামে একসময় মরা কার্তিক বলা হতো। কারণ এই সময় গ্রামে অভাব অনটন লেগে থাকত। অগ্রহায়ণ মানে ধান কাটার মৌসুম। কৃষকের ঘরে ধান আসলে সুখের দিন আসে। হেমন্ত মানে নবান্ন অর্থাৎ নতুন ধানে নতুন ভাত মানে নব অন্ন।

হেমন্ত শীতের আগন্ত একটু একটু পরশ বুলিয়ে দেয় সন্ধ্যায় শিশির ভেজা ঘাসে। সকাল হলেই চারিদিকে শিশিরের মুক্তোর ধানা যেন হীরার কনা। গাছের আগায় পাকা ধানের ডগায় কচু পাতার মাঝে জমে থাকে শিশির কণা কি অপরূপ গ্রামের সেই দৃশ্য! এ সময় ফুল ফোটে শিউলি কামিনী মল্লিকা জবা গোলাপ বকফুল ঘাসফুল সহ আরো কত ফুল। হেমন্ত শীতের কনকনে বাতাস বয়ে নিয়ে আসে।

হেমন্তে ফসলের মাঠে নতুন আলু বেগুন মুলা কাঁচা মরিচ লাল শাক পালং শাক বাঁধাকপি ফুলকপি টমেটো ইত্যাদি নানান শীতের সবজি চাষে ব্যস্ততা বাড়ে কৃষকের। নতুন ধান নিয়ে কৃষাণীরা উঠোনে সারাদিন ব্যস্ত দিন অতিবাহিত করে। নতুন ধানে নতুন চালে কৃষাণী বানাবে নানান স্বাদের পিঠা পুলি। উঠোনে খড়ের স্তূপে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের লাফালাফি ছেলেবেলার কথা খুব মনে পড়ে। আমাদের বাংলাদেশের সব ঋতুই বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ।

সে হিসাবে হেমন্ত ঋতু আমাদের জন্য খুবই আনন্দের খুবই খুশির। হেমন্তকে কাছে থেকে দেখতে গেলে যেতে হবে গ্রামে। কি অপরূপ দৃশ্য ঘরে বাইরে পথে রাস্তায় উঠোনে চারিদিকে সোনালী ধান আর ধান। হেমন্ত মানে কৃষকের ঘরে খুশির আনন্দ শীত আগমনের ছন্দ। হেমন্ত আসলে মনে পড়ে জীবনানন্দের সেই দুটি চরণ ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে এই বাংলায় কার্তিকের নবান্নের দেশে কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এই কাঁঠাল ছায়ায়’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়ক দুর্ঘটনায় বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যা
পরবর্তী নিবন্ধভালো ব্র্যান্ডিং এর অদৃশ্য শক্তি!