শিপইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ বিক্রি বন্ধ

পুরনো জাহাজের দাম কমে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

কোটি কোটি টাকা লোকসানের মুখে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাত্র মাস তিনেকের মধ্যে টন প্রতি গড়ে প্রায় বিশ হাজার টাকা দাম কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এন্ড রিসাইক্লাস এসোসিয়েশন গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে স্ক্র্যাপ বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়। স্ক্র্যাপ বিক্রি বন্ধ করে দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্টিল স্ক্র্যাপ বায়ার্স এসোসিয়েশন। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে স্ক্র্যাপ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রি রোলিং মিলগুলো কাঁচামাল সংকটে পড়তে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ডের সমুদ্রউপকূলে গড়ে উঠা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে পুরানো জাহাজ এনে ভেঙ্গে স্ক্র্যাপ বিক্রি করা হয়। যা দেশের রি রোলিং এবং স্টিল মিলগুলো কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে। এক সময় ৮০টিরও বেশি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থাকলে বর্তমানে ৩০টির মতো ইয়ার্ড চালু রয়েছে। যেখানে পুরানো জাহাজ কিনে এনে কেটে স্ক্র্যাপ বিক্রি করা হয়। মাস কয়েক আগে বিশ্ববাজারে পুরানো জাহাজের দাম বেড়ে যায়। পুরনো জাহাজের টন প্রতি দাম উঠে যায় ৫৮০ থেকে ৬০০ ডলারে। এই দামে জাহাজ কিনে কেটে লোহা বিক্রি করতে হলে প্রতি টনের দাম

পড়েছিল ৭২ হাজার টাকা। ওই দামে লোহা বিক্রি হচ্ছিল। কিন্তু গত কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক বাজারে লোহার দাম কমতে শুরু করে। ইতোমধ্যে পুরনো জাহাজের দাম টন প্রতি ২০/৩০ ডলার কমেছে।

শিপ ব্রেকিং ব্যবসায়ীরা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু কমলেও দেশে স্ক্রাপের দাম ব্যাপকভাবে কমে যায়। ৭২ হাজার টাকার স্ক্র্যাপের দাম নেমে আসে ৫৪ হাজার টাকায়। টন প্রতি ১৮ হাজার টাকা লোকসানের মুখে শিপ ব্রেকিং ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এন্ড রিসাইক্লাস এসোসিয়েশন জরুরি বৈঠক করে স্ক্র্যাপ বিক্রি বন্ধ করে দেয়। তারা বলেন, বিদ্যমান দরে লোহা বিক্রি করতে হলে এক একটি মাঝারি জাহাজেও ২০/৩০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে। ইয়ার্ডগুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে তারা স্ক্র্যাপ বিক্রি বন্ধ রাখছে। দাম বাড়লে আবার বিক্রি করা হবে। বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের পর ইতোমধ্যে টনপ্রতি দুই হাজার টাকা দাম বেড়েছে বলেও এক ব্যবসায়ী জানান।

অপরদিকে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এন্ড রিসাইক্লাস এসোসিয়েশনের এই সিদ্ধান্তকে হঠকারী বলে আখ্যায়িত করে স্টিল স্ক্যাপ বায়ার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব মো. মনির হোসেন শেখের সভাপতিত্বে এক বিশেষ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পূর্ব ঘোষণা ব্যতীত সবকটি ইয়ার্ডে মালামাল বিক্রি এবং সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এতে করে স্ক্র্যাপ নির্ভর রিরোলিং মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে বলা হয় যে, এতে স্টিল সেক্টরে জড়িত দুই লক্ষাধিক শ্রমিক মারাত্মক সংকটে পড়ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফিট হলেও আনফিট বলে অতিরিক্ত টাকা দাবি
পরবর্তী নিবন্ধরেয়াজুদ্দিন বাজার ও চাক্তাইয়ের আড়তে আলু নেই