শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগ ৬ মাসের জন্য স্থগিত

বহির্নোঙরে পণ্য হ্যান্ডলিং

হাসান আকবর | সোমবার , ১৫ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য হ্যান্ডলিং কাজের জন্য শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগের আলোচিত টেন্ডার অবশেষে স্থগিত করা হয়েছে। একটি রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত থেকে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগের কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত রেখে রুল জারি করে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বছরে অন্তত ৫ কোটি টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসা বড় বড় মাদার ভ্যাসেলগুলোর মধ্যে যেগুলোর ড্রাফট বেশি সেগুলো বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করতে পারে না। এসব জাহাজ থেকে বহির্নোঙরে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করা হয়। আবার বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করে এমন অনেক জাহাজের ড্রাফট কমানোর জন্য বহির্নোঙরে কিছু পণ্য খালাস করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের অনুমোদিত শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটররা এসব পণ্য খালাস কার্যক্রম পরিচালনা করে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ৩৩টি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর বহির্নোঙরে পণ্য খালাসের সাথে জড়িত। কিন্তু বহির্নোঙরের পণ্য হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে নতুন করে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার এক আদেশকে কেন্দ্র করে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ করা হয়, নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে পণ্য খালাসের লাইসেন্স দেওয়া হয় ২৩ প্রতিষ্ঠানকে। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক মন্ত্রীর স্ত্রী, এমপিসহ আওয়ামী লীগ নেতা। রাজনৈতিক বিবেচনায় পাওয়া এসব লাইসেন্স বাতিল এবং দরপত্রের মাধ্যমে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন জানিয়েছিল শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন।

অবশেষে বন্দর কর্তৃপক্ষ শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে। জুনে আহূত টেন্ডারে আজ দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল। কিন্তু টেন্ডারের দুটি শর্তের ব্যাপারে ক্ষুদ্ধ হন বিদ্যমান শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরদের অনেকে। তাদের ভাষায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে জায়েজ করতেই এই টেন্ডার প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে। এতে এমন দুটি শর্ত দেওয়া হয়েছে যাতে উক্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কেউ টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে কার্গো কেয়ার সলিউশনের মালিক জহিরুল ইসলাম, নোঙর মেরিন সার্ভিসের মালিক তানিয়া নুর এবং জ্যাক স্টিভিডোর সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন মজুমদার বাদী হয়ে হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। উক্ত পিটিশনের প্রেক্ষিতে আদালত ৬ মাসের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করে রুলনিশি জারি করে।

গতকাল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে আদালতের নির্দেশনা পৌঁছার পর রাতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেন। এতে করে আজ দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত তারিখ থাকলেও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগের দরপত্র দাখিল হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিস্তা প্রকল্পে ভারতকেই চান প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধট্রাম্পকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা