শিক্ষাবোর্ড কেবল সার্টিফিকেশনেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে: শিক্ষা উপমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, শিক্ষাবোর্ড সার্টিফিকেশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। অথচ বোর্ডের কাজ-মূল্যায়ন করেই শিক্ষার্থীদের সার্টিফাই করা। এ নিয়ে তাদের গবেষণা করার কথা। কিন্তু তারা তা করেন না, করার চেষ্টাও করছেন না। গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড আয়োজিত ‘কোভিড পরিস্থিতি: শিক্ষার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
শুধু সনদ দেওয়ার মধ্যে বোর্ডের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, কারণ, সার্টিফেকশন করা খুব সহজ। পরীক্ষা নেব, সার্টিফাই করব আর পয়সা পেয়ে যাবে বোর্ড। এগুলো কতটুকু শিক্ষাবোর্ডের কাজ। শিক্ষার্থীরা যাতে দক্ষতামূলক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেদিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শিক্ষার্থীরা চেয়ার-টেবিলে ফ্যানের নিচে বসে ফাইল স্বাক্ষরের করণিকের চাকরি করবে। অথবা সেই ধরনের কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত হবে। এ ধরনের একটা মাইন্ডসেট তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু এর চেয়ে ভ্রান্ত মানসিকতা ও বিভ্রান্তিকর শিক্ষা আর হতে পারে না। গৎবাধা প্রফেশন অপেক্ষা করছে, শিক্ষার্থীদের মন থেকে এটা সরাতে হবে। উন্নত দেশে বই-খাতায় শেখানোর পাশাপাশি দক্ষতা নির্ভর শিক্ষা দেওয়া হয়। বিদেশে কোন শিক্ষার্থী গ্রেড কম পেলে সেটি প্রতিষ্ঠানের দোষ। কিন্তু এখানে আমরা দায়টা শিক্ষার্থীর উপর চাপিয়ে দিচ্ছি। উপমন্ত্রী বলেন, কোভিড কিন্তু সহসা যাচ্ছেনা। অন্যান্য সংক্রামক রোগের মতোই থাকবে। মহামারীগুলো সভ্যতা এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা রাখে। এই করোনা মহামারীর চ্যালেঞ্জও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিকভাবে বিশ্লেষণের একটি সুযোগ এসেছে। মানুষ নিত্য নতুন চিন্তা-চেতনা হাজির করেছে। তেমনি কোভিডের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নতুন সুযোগ আমাদের সামনে এনে দিয়েছে। ক্ষতি যে হয়নি, তা নয়। তবে নতুন সুযোগের দ্বারও উন্মোচিত হয়েছে। নওফেল বলেন, স্কিল বেইজড এডুকেশন (দক্ষতা নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা) এবং আউটকাম বেইজড এডুকেশনের পথে হাঁটার সুবর্ণ সুযোগ হচ্ছে এখন। আমরা চাই টেঙটবুকগুলো গাইডলাইনের ভূমিকা পালন করবে। সেখানে যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য, উপাত্ত, নির্দেশনা থাকবে। এছাড়া এককেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা করলে হবে না, বিশ্বের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরও পরিবর্তিত হতে হবে। শিক্ষকদের পাঠদানের কৌশল পরিবর্তন আনতে হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার গুণগত পরির্তনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। সে লক্ষ্যে সরকার শিক্ষার বিকেন্দ্রীকরণে কাজ করছে। একটি দেশের শিক্ষার মান নির্ভর করে শিক্ষকদের অবস্থার উপর। যদিও শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আক্ষেপ রয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খুললেও স্বাস্থ্যের বিষয়টা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উদ্দেশ্যে মাউশির মহাপরিচালক বলেন, এটি কঠোর ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। কোন জায়গা থেকে যেন এটা নিয়ে কোন প্রশ্ন না উঠে। আমাদের অবহেলা ছিল, এমন কোন কথা যাতে শুনতে না হয়। প্রায়োরিটি হবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনটা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনও লুব্রিকেন্টসের বিশেষ ক্যাম্পেইন
পরবর্তী নিবন্ধভবিষ্যৎ পৃথিবী গড়ার ইঙ্গিত দেয় সাহিত্য