করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারী করোনার কারণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে স্থগিত থাকা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কবে থেকে নেওয়া হবে সেই তারিখ আগামী সোম–মঙ্গলবারের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে করোনা মহামারীতে শিক্ষকদের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম–আল–হোসেন। স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে অনেক স্কুল–কলেজে শিক্ষকদের উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়ার খবরের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এমনটাই জানান তিনি। সচিব বলেন, আমরা এ ধরনের কোনো নির্দেশনা জারি করিনি। খবর বিডিনিউজ ও বিবিসি বাংলার।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না কেন : করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের অন্য সবকিছুকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেয়ার সরকারি প্রচেষ্টা দেখা গেলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সরকার। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার পেছনে কর্মকর্তারা বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করছেন বলে জানা যাচ্ছে। এগুলো হল– (১) সংক্রমণের হার কমলেও এখনো রোগী পাওয়া গেছে। (২) শীতের সময়ে করোনার দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের শঙ্কা আছে। (৩) শিশুরা আক্রান্ত হলে দায় কেউ নেবে না। (৪) অভিভাবকদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক আছে। (৫) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানা সম্ভব হবে তা পরিষ্কার নয়। (৬) অনেক দেশেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে আবার বন্ধ করতে হয়েছে। (৭) অনেক দেশে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। আবার সমাধান সম্পর্কে কোনো মতামত না আসলেও মার্চ থেকে এগুলো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ আছে অনেকের মধ্যে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) বেনজীর আহমেদ বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতেও হবে আবার সংক্রমণ যাতে না হয় সেটিও দেখতে হবে। কিছুদিন পর পর তারিখ বাড়ালে, খোলা বা বন্ধ করা নিয়ে শিশুদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি হয়। এখানে সবাইকে আশ্বস্ত করেই স্কুল কলেজ খুলতে হবে। তিনি বলেন, স্কুল খোলার আগে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা গাইডলাইন দরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের জন্য এই গাইডলাইন হবে আলাদা।