শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বেসরকারি শিক্ষকদের

| শনিবার , ১৫ জুলাই, ২০২৩ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আজ শনিবার থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।

ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া। তিনি বলেন, সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষককর্মচারীরা সকল বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। গত ১১ জুলাই থেকে এই কর্মসূচি চলছে। অথচ সরকার আমাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ১৫ জুলাই থেকে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে সকল শিক্ষককর্মচারী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চলমান লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখবেন। খবর বিডিনিউজের।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ। পরে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানরত শিক্ষককর্মচারীদের কর্মসূচিতে এসে তাদের নতুন ঘোষণার কথা জানান। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে মাদুর বিছিয়ে শতাধিক বেসরকারি শিক্ষককর্মচারী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষককর্মচারীদের মধ্যে ‘পাহাড় সমান’ বৈষ্যমের অভিযোগ করে তারা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানাচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষক নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে ‘পাহাড়সম বৈষম্য’ রয়েছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল এক ধাপ নিচে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চ স্কেল প্রদান না করায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হয়ে আছে। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অসেন্তাষ ও হতাশা।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি বজলুর রহমান মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে একটি যুদ্ধবিধস্ত দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমকি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এমতাবস্থায় দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুত জাতীয় শিক্ষানীতি২০১০ বাস্তবায়ন, শিক্ষায় বিনিয়োগে ইউনেস্কো আইএলওর সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন এবং সবার জন্য শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষায় অগ্রাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে হলে দরকার স্মার্ট শিক্ষক। আর স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের কোনো বিকল্প নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরুমা ও থানচিতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
পরবর্তী নিবন্ধতিনশ টাকার ডেঙ্গু টেস্ট দেড় হাজার টাকা!