বাংলাদেশের শিক্ষার সঙ্গে শ্রমবাজারের যে দূরত্ব, তা তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানে প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আলোচকবৃন্দ। তারা বলেন, এই দূরত্বের কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসন্তুষ্টি বাড়ছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে ‘যুব কর্মসংস্থান : প্রত্যাশা ও সুপারিশ’ শীর্ষক নীতি আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ইউএসএআইডির অর্থায়নে ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। নীতি আলোচনায় ক্লিফটন গ্রুপের পরিচালক ও সিইও এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সনাতনী। একজন শিক্ষার্থী কোনো ইন্টার্নশিপ বা চাকরির অভিজ্ঞতা না নিয়েই মাস্টার্স শেষ করে ফেলেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতার একটা বড় ফারাক থেকে যায়। বেকার সমস্যা দূর করতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি ও ব্যবসার অভিজ্ঞতা অর্জন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু সরকারি চাকরির জন্য তরুণদের ঠেলে না দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য পরিবারগুলোকে অনুপ্রেরণা দিতে হবে।
এসময় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) চট্টগ্রাম প্রধান অ্যালেক্সসিউস চিছাম বলেন, গ্রাম ও শহরের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেও পার্থক্য আছে। কিন্তু চাকরির বাজারে আমাকে বিদেশ থেকে পড়ে আসা, ভালো ইংরেজি জানে এমন মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। শিক্ষার এই বৈষম্য দূর করতে নীতিনির্ধারকদের কাজ করতে হবে। স্বাগত বক্তব্য দেন, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি চিফ অব পার্টি আমিনুল এহসান। তিনি ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে বলেন, আমরা নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে চলছি। দীর্ঘদিন থেকে সমাজে চলতে থাকা এসব সমস্যার কথা, নাগরিকদের দাবি ও অধিকারের কথা তুলে ধরাই এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য।
ইউএসএআইডির স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় আলোচনা, নাট্য প্রদর্শনী, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি পরিচালনা করছে। ক্যাম্পেইনটির আওতায় www.amiojittechai.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রহণ করা হচ্ছে নাগরিকদের দাবি ও মতামত।
অনুষ্ঠানে ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আলোচনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার সদরুল আমিন। এসময় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন চবি ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সভাপতি ফারহানা যুথী, বিএনসিসি কর্ণফুলী রেজিমেন্টের সাবেক অ্যাডজুটেন্ট আবদুল্লাহ আল মামুন ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইয়ুথ চিফ এএনএম তামজীদ। নীতি আলোচনা ছাড়াও অনুষ্ঠানে নাগরিক সমস্যা নিয়ে নাট্য, কুইজ ও ভিডিও মেসেজ প্রতিযোগিতা এবং ক্যাম্পেইনের রিল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অংশ নেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।