শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে শিক্ষার্থী আহত

| মঙ্গলবার , ৫ মার্চ, ২০২৪ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে কলেজের শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া জানান।

আহত শিক্ষার্থী তমালের পায়ে গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ সময় কানের পাশ দিয়ে গুলি যাওয়ায় আরেক ছাত্রীও অসুস্থ হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম জানা যায়নি। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খবর বিডিনিউজের।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী আফিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের শিক্ষক রায়হান শরীফ ক্লাসে মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি আমাদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের কারও কি পোষা প্রাণী আছে? আমার একটা পোষা প্রাণী আছে। এই বলে তিনি তার সঙ্গে থাকা একটি কালো ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে আমাদের দেখিয়ে বলেন, এটা হচ্ছে আমার পোষা পাখি। আফিয়া বলেন, এ সময় হঠাৎ করেই পিস্তল থেকে গুলি বের হয়ে যায়। একজনের পায়ে লেগেছে, আর একজনের কানের পাশ দিয়ে গেছে।

এরপরই ক্লাসরুমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা শিক্ষক রায়হান শরীফকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রায়হান শরীফকে উদ্ধার করে এবং তার কাছে থাকা পিস্তলটি জব্দ করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া। তিনি আরও বলেন, পিস্তলটি ওই শিক্ষকের নিবন্ধিত কিনা এখনও যাচাই করা যায়নি। শিক্ষক আমাদের হেফাজতে আছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। শিক্ষকের শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যার পর আহত শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান তমালের (২২) পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তমালের আরেক সহপাঠী শিক্ষার্থী সাদিয়া বলেন, স্যারের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়েছে। তিনি প্রতিনিয়ত ক্লাসে এসে শিক্ষার্থীদের আপত্তিকর ইশারা করতেন। বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত। তারপরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রায়হান শরীফের সহকর্মী ও কলেজের ফরেনসিক ও মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হিল কাফি বলেন, শিক্ষক রায়হান শরীফ এর আগেও কলেজে পিস্তল নিয়ে এসেছিলেন। বিষয়টি নজরে আসার পর তাকে সর্তক করায় সে আমাকেও ভয় দেখিয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও হোস্টেলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মাদক অফার করারও অভিযোগ রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ তাকে কয়েকবার বদলির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ডিজি অফিসকে ম্যানেজ করে সে বহাল তবিয়তে আছে। এ বিষয়ে মেডিকেল কলেজের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পিস্তল নিয়ে শিক্ষক রায়হান শরীফ কেন কলেজে আসেন? তার বিরুদ্ধে কেন আগে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। আজকের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কলেজের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহাসড়কে তিন চাকার যান,চকরিয়ায় ৪৪ গাড়ি জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধসরকার শক্তিশালী হওয়ার পরও মূল্যস্ফীতি, চাঁদাবাজি কমছে না