চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ও উপ–উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবং প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে দ্বিতীয়দিন অবস্থান কর্মসূচি করেছে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষকদের আন্দোলনের স্থানে দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র। যেখানে একপাশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে গান–বাজনায় উদযাপন করা হচ্ছিল ‘গণতন্ত্রের বিজয়’। অপরদিকে তার পাশেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতি নেতৃবৃন্দ পালন করছিল অবস্থান কর্মসূচি। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় চবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
অবস্থান কর্মসূচিতে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর ড. আলী আজগর চৌধুরী বলেন, শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন ভিসির মদদে একই স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ নাম দিয়ে তারা গান, বাজনা, মঞ্চনাটক করে চলছেন। নিরাপত্তা কর্মচারীদেরকে দর্শকের কাতারে বসিয়ে অনুষ্ঠান করছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন দীনতা কবে থেকে শুরু হয়েছে আমার জানা নেই। যেখানে এমন আনন্দ উদযাপনের অনুমতি নেই সেখানে তারা আমাদের কর্মসূচি বানচাল করতে পরিকল্পিতভাবে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করছেন।
সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ. কে. এম কৌশিক আহমেদ বলেন, এটা কি বিশ্ববিদ্যালয়! শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে আপনারা শিক্ষকদের অপমান করছেন। একদিকে আমাদের কর্মসূচি অন্যদিকে আপনারা গান, বাজনা করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি জানতে পারেন অনতিবিলম্ব আপনাকে অপসারণ করবেন। শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানাবো অতিসত্বর এই উপাচার্য, উপ–উপাচার্যকে অপসারণ করার ব্যবস্থা করুন। সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, শেষ ভালো যার সব ভালো তার। আমরা আশা করি আপনি স্বসম্মানে বিদায় হবেন। না হলে লেজ গুটিয়ে পালানোর রাস্তাও পাবেন না। শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, উপাচার্য একদিকে আমাদের সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছেন অন্যদিকে আমাদের কর্মসূচি ব্যহত করার জন্য ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ নামে গান বাজনা করে যাচ্ছেন। আমি আবারও বলতে চাই, মান সম্মান নিয়ে চলে যান, না হয় লেজ গুটিয়ে পালাবার পথও পাবেন না। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে উপাচার্য, উপ–উপাচার্যের পদত্যাগ চাচ্ছি। উনাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপ–উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে’র পদত্যাগের দাবিতে টানা তিনদিনের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। গতকাল দ্বিতীয়দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ আন্দোলন।