বর্তমানে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেভাবে একের পর এক শিক্ষকদের নাজেহালের ঘটনা ঘটছে তা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। শিক্ষকদের সাথে নিজেদের শিক্ষার্থী কর্তৃক এমন জঘন্য অপমানজনক ব্যবহার দেখে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। এই জঘন্য কর্মকাণ্ড এখনই বন্ধ করা উচিৎ। এভাবে একের পর এক শিক্ষকদের নাজেহালের ছবি ও ভিডিও দেখে শিক্ষার্থী নামের এই সন্তানদের নিবৃত করতে এবং শিক্ষকদের সাথে বেয়াদবী বন্ধে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কঠোর নির্দেশনা প্রদান জরুরি বলে মনে করছি।
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। আর শিক্ষকরা হচ্ছেন শিক্ষার প্রাণ। মা–বাবার পরেই শিক্ষকদের সম্মানজনক স্থান। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে শিক্ষা গুরুর সাথে বেয়াদবী করে কেউ কখনো বিদ্যার্জন করতে পারেনি, পারবেও না। আর একটা ব্যাপার এখানে উল্লেখ করাটা জরুরি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রাজনীতি বা রাজনীতির সাথে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা কঠিনভাবে বন্ধ করতে হবে। কিছু কিছু শিক্ষক নামের একচোখা, দলীয় সেবাদাসের কারণে আজ পুরো শিক্ষক জাতি লজ্জিত, অপমানিত ও নিগৃহীত।
আরেকটা বিষয় এখানে সবাইকে ভাবতে হবে, যে সময় যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশনা মেনে চলা সকল শিক্ষকের জন্য বাধ্যতামূলক। চাকরি বাঁচিয়ে রাখতে সরকার ও পরিচালনা কমিটির নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা ছাড়া সেখানে একজন শিক্ষকের কিছুই করার থাকে না। এটাও সবাইকে বুঝতে হবে। তারপরেও যদি কোনো শিক্ষকের গুরুতর অসদাচারের প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তা আইনগতভাবে মোকাবেলা করাই শ্রেয়। শিক্ষাগুরুর সাথে বেয়াদবী না করে নির্দেশদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা জরুরি বলে আমি মনে করি। আবার কোথাও কোথাও শিক্ষকদের মধ্যে মতপার্থক্য, মনোমালিন্য ও পূর্ব শত্রুতার শোধ নিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
শেষ কথা– এক মুহূর্তের জন্য আর কোনো শিক্ষক নাজেহালের ঘটনা ঘটুক তা আমরা আর দেখতে বা শুনতে চাই না। শিক্ষক–শিক্ষার্থীর শ্রদ্ধা ও স্নেহশীল সম্পর্ক অটুট থাকুক। শিক্ষক–শিক্ষার্থীর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে শিক্ষাঙ্গনে পড়ালেখার পরিবেশ ও শান্তি ফিরে আসুক। লেখক: সভাপতি, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ।