শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত

৭ বছর ধরে বন্ধ ৪০ বছরের পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রটি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ৪০ বছরের পুরোনো শিকলবাহার ৬০ মেগাওয়াট গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিডিবি। ২০১৫ সাল থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও ২০১৭ সাল থেকে এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৭ বছর বন্ধ থাকার পর অব্যাহত লোকসানের মুখে অবশেষে ৪০ বছরের পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রটির যন্ত্রপাতি নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিডিবি।

পিডিবি সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সঞ্চালন লাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি ট্রান্সফরমার বসানো হলেও কেন্দ্রটি উৎপাদনে যেতে পারেনি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরিচালন খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হওয়ায় ব্যয় হ্রাসে কেন্দ্রটির জনশক্তি ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী।

কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীর পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নে ১৯৮৪ সালে গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। ৪০ বছরের পুরোনো হওয়ায় এর পরিচালন ব্যয় বেড়ে যায়। গত ৭ বছর ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়ে কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। লাগাতার বন্ধ থাকায় এরমধ্যে এই কেন্দ্রটির অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিউবো শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরিদুজ্জামান আজাদীকে বলেন, শিকলবাহা ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বোর্ড মিটিংয়ে। এ জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির লোকজন দেখবেন কোন কোন যন্ত্রপাতি বিক্রি করা হবে। কোন কোন যন্ত্রপাতি অন্য প্রকল্পে ব্যবহার করা যাবে। এরপর নিলামের জন্য টেন্ডার করা হবে। ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাশে পিডিবির আর একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র (১৫০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট) নির্মাণ করা হয়েছে। অকশনে পুরোনো ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নদীর পাড়ের জেটি, গ্যাস লাইন এবং সীমানাওয়াল বাদ দেয়া হবে। এগুলো পার্শ্ববর্তী ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলো ছাড়াও কোন কোন যন্ত্রাংশ বিক্রি করা হবে তা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এগুলো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

উল্লেখ্য, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে শিকলবাহা এলাকায় ১৯৮৪ সালে গ্যাসনির্ভর ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছিল। ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাশে পিডিবির আরও দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ১৫০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।

পিডিবির একটি সূত্র জানায়, শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে বেসরকারি মালিকানায় আরও পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে পিডিবি ১৬ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ক্রয় করে থাকে। অথচ ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন খরচ ছিল প্রতি ইউনিট পাঁচ টাকার কম। গ্যাসনির্ভর হওয়ায় শিকলবাহা কেন্দ্রের উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম হলেও পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে এই কেন্দ্র চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধসাজেক ভ্রমণে আরও ৩ দিনের নিষেধাজ্ঞা