শাহবাগের নারী সমাবেশ থেকে ১১ দাবি

| শনিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ধর্ষক ও নারী নির্যাতনকারীদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমঅধিকার, সভা-সমাবেশে নারীবিদ্বেষী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করাসহ ১১ দফা দাবিতে শাহবাগে ‘নারী গণসমাবেশ’ করেছে বামধারার নারী সংগঠনগুলো। খবর বিডিনিউজের।
‘সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নারী-শিশু নিপীড়ন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জোরদার করুন’ আহ্বানে শুক্রবার বিকালে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ হয়। খবর বিডিনিউজের।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির নারী সেলের আহ্বায়ক লক্ষ্মী চক্রবর্তী এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু। সমাবেশে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন লক্ষ্মী চক্রবর্তী। দাবিগুলো হল-
সারা দেশে অব্যাহতভাবে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করতে হবে। বাংলাদেশকে সিডো সনদের ২ এবং ১৬-১ (গ) ধারা স্বাক্ষর করে সিডো সনদের পূর্ণ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে। ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন-১৮৭২-১৫৫(৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে। অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে। তদন্তকালে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারী বিদ্বেষী সংবিধানবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএলের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চা সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। সারা দেশে মাদক বন্ধে সরকারিভাবে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে বিদ্যমান নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে। এবং গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সমাবেশ থেকে আগামী মাসব্যাপী সারা দেশের জেলায় জেলায় নারী সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মহিউদ্দিন
পরবর্তী নিবন্ধহাতি-মানুষের সংঘাত নিরসনে পটিয়ায় সচেতনতামূলক সভা