শেষ দিনে কিছুটা রোমাঞ্চের আভাস জাগালেও ফল বের করে আনতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ড্র–ই মেনে নিতে হয়েছে গল টেস্টের দুই দল বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কাকে। ফলে ২১ টেস্ট পর ড্র–তে শেষ হলো বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ। সবশেষ ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র করেছিল বাংলাদেশ। এরপর খেলা ২১ টেস্টের ৭টি জেতে তারা, আর হারে অন্য ১৪টি। এদিকে গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ড্রয়ের দেখা মিলেছে প্রায় ১২ বছর পর। সবশেষ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচই অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছিল। এরপর ২৬ টেস্টের প্রতিটিতেই ফল আসে।
গতকাল শনিবার ম্যাচের ৫ম ও শেষ দিনে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান নিয়ে খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে ৩ উইকেট হারিয়ে আরও ১০৮ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা দেয় তারা। বৃষ্টির আগে ১৯ ওভার খেলে মাত্র ৬০ রান আসে শান্ত ও মুশফিকের জুটিতে। বাউন্ডারি ছিল কেবল পাঁচটি। ১০২ বলে ৪৯ রান করে রান আউট হন মুশফিক। এরপরই বৃষ্টি নেমে খেলা বন্ধ থাকে তিন ঘণ্টা। তবে শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিং ছিল পরিস্থিতির সঙ্গে বেমানানরকম ধীরগতির। বাংলাদেশের ইনিংস ঘোষণার দেরি নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ থাকে যথেষ্টই।
দুপুরে যখন খেলা শুরু হয়, দিনের বাকি তখন ৫০ ওভার। বিস্ময় উপহার দিয়ে আবার ব্যাটিংয়ে নামে ২৪৭ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ। লিটন দাস (৩) ও জাকের আলি (২) বিদায় নেন দ্রুতই। নাঈম হাসানকে নিয়ে মন্থর গতিতে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান শান্ত। নাইম অপরাজিত থাকেন ৭ রান করে। বাউন্ডারিবিহীন টানা ১৩ ওভারের বেশি কাটিয়ে শান্ত সেঞ্চুরি পূরণ করেন ১৯০ বলে। প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রানের ইনিংস খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বিতীয়বারে করেন অপরাজিত ১২৫ রান। এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরি একাধিকবার করা বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করা ষোড়শ ক্রিকেটার। সেঞ্চুরির পর দুই ওভারে তিনটি ছক্কা মেরে ইনিংস ছেড়ে দেন তিনি।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করে ৬ উইকেটে ২৮৫ রান। শ্রীলঙ্কার সামনে তখন দাঁড়ায় ৩৭ ওভারে ২৯৬ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য। সেটি তাড়ার চেষ্টাও করেনি স্বাগতিকরা। শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ছয় ওভারে ছয়টি বাউন্ডারি মারলেও দ্রুতই বাংলাদেশের স্পিনাররা ছন্দ পেয়ে যাওয়ার পর তারা ধুঁকতে থাকে। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিসাঙ্কাকে ২৪ রানে থামান নাঈম হাসান। দারুণ বোলিংয়ে তিন উইকেট নেন তাইজুল। অভিষিক্ত লাহিরু উদারা ফেরেন ৯ রানে। ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে ৪৫ বলে ৮ রান করে আউট হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সিলি পয়েন্টে চমৎকার রিফ্লেঙ ক্যাচ নেন মোমিনুল হন। আরেক অভিজ্ঞ দিনেশ চান্ডিমাল ৪৪ বলে ৬ রান করে আউট হন দুর্দান্ত ডেলিভারিতে।
শেষ দিকে তাইজুলের বলে মিড অফে কামিন্দু মেন্ডিসের ক্যাচ ছাড়েন মুশফিক। কামিন্দু এবং ধনাঞ্জয়া ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৩২ ওভারে ৪ উইকেটে ৭২ রান করার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল। জোড়া সেঞ্চুরির কারণে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগামী বুধবার শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।