চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স মানে পুরানো দিনের গল্প। অ্যাথলেটিক্স বলতে যা বুঝায় তা চট্টগ্রামে কবে হয়েছে কেউ বলতে পারেনা। বছরে দুইটা দিন কোনমতে কিছু ছেলে মেয়ে এনে একটু দৌড় ঝাপ করাতেই যেন শেষ অ্যাথলেটিক্স। অথচ অ্যাথলেটিক্স হচ্ছে খেলার ও রাজা। সিনিয়রদের মুখে শুনেছি চট্টগ্রামে একটা সময় জমজমাট অ্যাথলেটিক্স হতো। তবে সেটা আমার ২৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে দেখিনি। তাহলে সেটা কবে হয়েছিল তা সহজেই অনুমান করা যায়। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার গত বছরের নির্বাচনের পর এরই মধ্যে সবগুলো সাব কমিটি গঠিত হয়ে গেছে। যেখানে অ্যাথলেটিক্সের বাটন তুলে দেওয়া হয়েছে দুই অ্যাথলেটের হাতে। তারা আবার যেনতেন অ্যাথলেট নন। জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করা অ্যাথলেট। এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক জাতীয় অ্যাথলেট শার্মিষ্টা রায়কে। আর সম্পাদক করা হয়েছে সাবেক জাতীয় সাইক্লিস্ট আবু হেনা মোস্তফা কামাল টুলুকে। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে আরেক জাতীয় অ্যাথলেট সরওয়ার আলম সোহেলকে। কাজেই এই কমিটি নিয়ে আশা করা যায় অন্তত জেগে উঠবে চট্টগ্রামের অ্যাথলেট।
কিন্তু অ্যাথলেটিক্স কমিটির সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া আবু হেনা মোস্তফা কামাল টুলু শোনালেন আশাবাদের কথা। তার মতে চট্টগ্রামে অ্যাথলেটিক্স নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। তিনি আবার অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের নির্বাহি কমিটির সদস্য। চেয়ারম্যান শর্মিষ্টা রায়ও অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সদস্য। কাজেই দুইজনের সম্মিলনে ভাল কিছু হতে পারে চট্টগ্রামে। যদিও টুলু নানা প্রতিবন্ধকতার কথাও শোনালেন। ফিল্ডের হার্ডেলসের মত মাঠের বাইরেও নানা হার্ডেলস টপকাতে হয় দেশের অ্যাথলেটিক্সকে। সেখানে চট্টগ্রামতো অনেক পিছিয়ে। তবে নতুন করে শুরু করতে চান টুলু। আর সে জন্য প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প দেখছেননা তিনি। যদিও আমরা প্রায়শই শুনি তৃণমূল থেকে ছেলেমেয়েদের এনে দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কিন্তু সেটা আর হয়না। ঘোষণাতেই থেকে যায়। তবে টুলু মনে করেন যেহেতু বর্তমানে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনে সভাপতি, সাধারণ সবাই যথেষ্ট আন্তরিক দেশের অ্যাথলেটিক্সকে এগিয়ে নিতে কাজেই তাদের নিয়ে অনেক কাজ করা যায়। তবে সেটা নির্ভর করবে মূলত আমরা চট্টগ্রাম থেকে কিভাবে শুরুটা করতে পারছি তার উপর। তবে শুরুতে একটি বড় করে সেমিনার করতে চান টুলু। যার মাধ্যমে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে অ্যাথলেটিক্স সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা সৃষ্টি করতে হবে। কারণ এখন ক্রিকেট কিংবা ফুটবলের জোয়ারে অনেক ছেলে মেয়েই অ্যাথলেটিক্সে আসতে চায়না। তাই আগে সবার মধ্যে অ্যাথলেটিঙ সম্পর্কে একটি সঠিক ধারণা দিতে হবে। এরপর সবাইকে নিয়ে বসে সঠিক পরিকল্পনা করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
সম্পাদকের সাথে সুর মেলালেন কমিটির চেয়ারম্যানও। শর্মিষ্টা রায় বললেন অ্যাথলেট তুলতে হলে আগে খেলার সুযো্গ সৃষ্টি করতে হবে। তারপর প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। সবচাইতে বড় যে কাজটা করতে চাই সেটা হচ্ছে খেলোয়াড়দের আর্থিক নিশ্চয়তা দিতে চাই। কারণ এখনকার ছেলে মেয়েরা আর্থিক নিশ্চয়তা না পেলে খেলাধুলায় আসতে চায়না। তিনি বলেন আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। তিনি বলেন শুধু দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকার মানুষ আমি নই। আমি কাজ করতে চাই। ভাল কাজ। অ্যাথলেট তুলতে না পারলে কোন সফলতা আসবেনা। তাই একটি সভা ডেকে চেষ্টা করব ভাল কিছু দিয়ে শুরু করার। এবারের অ্যাথলেটিক্স কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে রুহুল আমিন, কামাল উদ্দিন, ইবাদুল হক লুলু, জোৎস্না আফরোজ এবং মোশারফ হোসেনকে। যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে সরওয়ারুল আলম সোহেল, আজমল হোসেন এবং মিলজার হোসেনকে। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন মোজাম্মেল হক, স্মরনীকা চাকমা, ইসমাইল কুতুবী, ফুলিনা চৌধুরী, শওকত করিম খান, জাওয়াদ বিন মুজিব, হাসান মুরাদ, আরিফুল ইসলাম, শাহ আলম এবং মোঃ নাজিম উদ্দিনকে।