শত্রু ঘাঁটিতে মিসাইল হানার সক্ষমতা দেখাল নৌ বাহিনী

বার্ষিক সমুদ্র মহড়া

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ

শত্রুপক্ষের বিমান বা ঘাঁটিতে মিসাইলের আঘাত হানার ক্ষেত্রে শতভাগ সক্ষমতা প্রমাণের মধ্য দিয়ে গতকাল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজগুলোর বার্ষিক সমুদ্র মহড়া ‘এঙারসাইজ সেফ গার্ড-২০২১’ সম্পন্ন হয়েছে। সফল মিসাইল উৎক্ষেপণসহ মহড়া প্রত্যক্ষ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান। মন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে সর্বাধুনিক যুদ্ধজাহাজ বিএনএস সমুদ্র অভিযান থেকে সমাপনী দিবসের মহড়া প্রত্যক্ষ করেন। মহড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জাহাজে এসে পৌঁছালে কমান্ডার বিএন ফ্লিট কমডোর মীর এরশাদ আলী স্বাগত জানান এবং নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধান অতিথিকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করেন।
১৫ দিনব্যাপী এ মহড়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোল ক্রাফট, মিসাইল বোটসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাহাজ অংশগ্রহণ করে। নৌবাহিনীর মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ও হেলিকপ্টারও প্রত্যক্ষভাবে মহড়ায় অংশ নেয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, সেনা ও বিমানবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম সংস্থাগুলো এ মহড়ায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। ৪টি ধাপে অনুষ্ঠিত মহড়ার উল্লেখযোগ্য দিকগুলোর মধ্যে নৌবহরের বিভিন্ন কলাকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, লজিস্টিক অপারেশন, ল্যান্ডিং অপারেশন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত নৌ স্থাপনাগুলোর প্রতিরক্ষার বিষয়গুলো মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। নৌবাহিনীর এ বার্ষিক মহড়ার এবারকার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল সমুদ্র এলাকায় দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ, সমুদ্রসম্পদের হেফাজত, সমুদ্রপথের নিরাপত্তা বিধানসহ চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, উপকূলীয় এলাকায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সমুদ্র এলাকায় প্রহরা নিশ্চিত করা। চূড়ান্ত দিনের মহড়ার উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে মিসাইল উৎক্ষেপণ, বিমানবিধ্বংসী গোলাবর্ষণ, সাবমেরিন বিধ্বংসী রকেট ডেপথ চার্জ নিক্ষেপণ, ভিবিএসএস ও নৌ কমান্ডো মহড়া এবং নৌযুদ্ধের বিভিন্ন কলাকৌশল। মহড়ার সফল সমাপ্তির পর প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কর্মকর্তা ও নাবিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। তিনি সফল মহড়ার জন্য নৌ সদস্যদেরকে অভিনন্দন জানান এবং নৌ সদস্যদের পেশাগত মান, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন এবং সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেন। দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতি ও যেকোনো দুর্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় প্রত্যন্ত এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তাসহ জনসাধারণকে যে মানবিক সহায়তা দিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
নৌ মহড়ার সমাপনী দিনে অন্যান্যের মধ্যে নৌ সদর দফতরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিটসহ স্থানীয় উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডলারের দাম খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নেই : অর্থমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন