তীব্র খরতাপে এবার মরে যাচ্ছে শঙ্খচরের সবুজ শাকসবজির ক্ষেত। খরতাপের কারণে চরের কিছু কিছু ক্ষেতের সবজি গাছ ও পাতা কুচকে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার দুপুরে চন্দনাইশের সবজি ভান্ডার হিসেবে খ্যাত শঙ্খনদের চরে উদপাদিত সবজি ক্ষেতের মধ্যে ধনিয়া, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া ও শসা ক্ষেতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এ অবস্থায় কৃষকরা টিক মতো সেচ দিতে না পারায় কমে যাচ্ছে সবজির উদপাদনও।
শঙ্খচরের কৃষক সাতকানিয়ার উত্তর কালিয়াইশ গ্রামের মোহাম্মদ মারুফ ও মোহাম্মদ হাসান জানান, গরমের যা অবস্থা, সবজি ক্ষেতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক কৃষক ক্ষেতে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন। সবজি ক্ষেত শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। কৃষক মারুফ জানান, তার ১০ গণ্ডা পরিমাণ ধনিয়া ক্ষেতের কিছু অংশ তীব্র খরতাপে ঝলসে গেছে। মরিচ ক্ষেতেরও একই অবস্থা। কৃষক হাসানের মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতেও লেগেছে খরতাপের প্রভাব, মরে যাচ্ছে গাছ। একই অবস্থা আম, কাঠাল, লিচু, জামরুল, জামসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলনেও। গাছ থেকে অতিরিক্ত হারে ঝরে পড়ছে এসব ফল। এ অবস্থায় এ বছর ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিভাগ থেকেও কৃষকদের উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে চলমান তীব্র তাপদাহে ফল–ফসলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ। এক্ষেত্রে ফল জাতীয় সবজি যেমন বেগুন, টমেটো, মরিচ, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, করলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটল, শসা, এবং ঢেঁঢ়শ ইত্যাদিতে ৩ থেকে ৪ দিন অন্তর সেচ প্রয়োগ করা, পাতা জাতীয় সবজি যেমন ডাটা শাক, লাল শাক, পুইশাক, কলমী শাক, লাউশাক ইত্যাদিতে ২ থেকে ৩ দিন অন্তর সেচ প্রয়োগ করা। এছাড়াও মাটির বৈশিষ্টের উপর ভিত্তি করে ফলন্ত আম, লিচু, জামরুল, জাম ও কাঁঠাল ইত্যাদি ফলন্ত গাছে ৭ থেকে ১০ দিন অন্তর সেচ দেয়া এবং তাপ প্রবাহ থেকে ধান ফসল রক্ষার জন্য জমিতে সর্বদা ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন জানান, চলমান তীব্র খরতাপে কৃষকদের ক্ষেতে কাজ করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। তারপরও ক্ষেতে কৃষকদের সেচের পানি ধরে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। গরমে কৃষকরা কী করবে তার করণীয় সম্পর্কেও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।