লোহাগাড়ার পুটিবিলায় পারিবারিক কলহের জেরে বিষপানে জোৎস্না আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় ময়নাতদন্ত শেষে পিতার বাড়ির সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। মারা যাওয়া জোৎস্না আক্তার পুটিবিলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম তাঁতী পাড়ার মামুনুর রশিদের স্ত্রী ও চরম্বা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়ারবিলা এলাকার সরওয়ার কামালের কন্যা।
ইউপি সদস্য আবদুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন যাবত তারা স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস–বিচারও হয়েছে। প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর সঙ্গে কলহ হলে বাপের বাড়ি চলে যায় জোৎস্না। মঙ্গলবার সকালে সেখান থেকে শ্বশুর বাড়ির সামনে এসে বিষপান করে বসে সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে আশঙ্ক্ষাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক সন্তান রয়েছে।
নিহতের পিতা সরওয়ার কামাল জানান, প্রায় ৬ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তারা সুখীই ছিল। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে থেকে স্বামী মামুনুর রশিদ পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়লে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এরপর থেকে তার মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল সে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিবার সালিশ–বিচারও করেছেন। কিন্তু তার মেয়ের স্বামীর স্বভাব কোনোভাবে পরিবর্তন করা যায়নি। বাড়াবাড়ি করলে মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়ারও ভয় দেখাত। শেষবার স্বামী প্রচণ্ড মারধর করায় শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসি মেয়েকে। মঙ্গলবার পরিবারের সকলের অগোচরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে বিষপান করে বসে সে। মেয়ের আত্মহত্যার জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনই দায়ী।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মুহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, পুটিবিলায় এক গৃহবধূ বিষপানে মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। নিহতের পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।