লোহাগাড়ায় বন্য শুকর শিকারীর গুলিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্র নিহত হয়েছে। নিহতের নাম মো. মারুফুল ইসলাম (১৩)।
গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের পশ্চিম নারিশ্চার চাঁন্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মারুফুল ইসলাম চুনতি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পশ্চিম নারিশ্চা চাঁন্দার বটতল এলাকার মৌলভী মো. ফোরকানের ছেলে ও পুটিবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।
পুলিশ রাত ১১টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে।
নিহতের পিতা মৌলভী মো. ফোরকান বলেন, “ঘটনার দিন মাগরিবের নামাজের কিছুক্ষণ পর আমি ঘরে আসি। এসময় আমার ছেলে মারুফ ঘরের সামনে বসে লেখাপড়া করছিল। আমি ঘরে প্রবেশের কিছুক্ষণ পর হঠাৎ গুলির আওয়াজ শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখি মারুফ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। তখন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত লোহাগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের পার্শ্ববর্তী বড়ুয়া পাড়ার জিতেন বড়ুয়া নামের এক লোক নিয়মিত বন্য শুকর শিকার করে। শিকার শেষে তার অস্ত্রটি আমার বাড়ির পাশে খড়ের গাদায় লুকিয়ে রাখে। মূলত তার গুলিতেই আমার ছেলে নিহত হয়েছে।”
চুনতি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মোনাফ সিকদার জানান, বড়ুয়া পাড়া এলাকার বেশ কয়েকজন লোক নিয়মিত বন্য শুকর শিকার করে। তাদের মধ্যে জিতেন বড়ুয়া বন্য শুকর শিকারে ব্যবহৃত অস্ত্রটি মৌলভী মো. ফোরকানের খড়ের গাদায় লুকিয়ে রাখত। ঘটনার দিন হয়তো বন্য শুকর শিকারের জন্য অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় অসতর্কতাবস্থায় ট্রিগারে চাপ পড়লে ঘরের সামনে থাকা মারুফ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। ঘটনার পর থেকে জিতেন বড়ুয়া পলাতক রয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হানিফ জানান, শিশু মারুফকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে। তার বুকের বাম পাশে গুলি লেগে পেছন দিকে বেরিয়ে গেছে।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসাইন মাহমুদ জানান, নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মারুফের পিতা বাদী হয়ে জিতেন বড়ুয়াকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসামীকে গ্রেপ্তার ও অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, “শুনেছি জিতেন বড়ুয়া সহ কয়েকজন লোক নিয়মিত বন্য শুকর শিকার করে। তাদের মধ্যে জিতেন বড়ুয়া তার ব্যবহৃত অস্ত্রটি নিয়মিত মৌলভী ফোরকানের বাড়ির পার্শ্ববর্তী খড়ের গাদায় রাখত বলে জেনেছি। ধারণা করা হচ্ছে ঘটনার দিন খড়ের গাদা থেকে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রিগারে চাপ পড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে শিশু মারুফ মারা যায়।”