লোহাগাড়ায় নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জনবহুল এলাকায় কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার স্থাপন করে সিএনজি গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রাম্যমাণ এসব গ্যাসস্টেশন থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহন গ্যাস নিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ভ্রাম্যমাণ গ্যাসস্টেশনগুলো গ্যাস বিক্রি করছে। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটনার আশংকা রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ৩টি স্থানে কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে এ গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে উপজেলা সদরের দরবেশহাট রোডের কাজির পুকুর পাড় এলাকায় ২টি ও পদুয়া তেওয়ারীহাট এলাকায় ১টি। ভ্রাম্যমাণ গ্যাসস্টেশন পরিচালনাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। দুর্ঘটনা ঘটার শংকায় এসব গ্যাসস্টেশনের আশপাশে বসবাসকারীরা চরম আতংকে দিনাতিপাত করছেন।
কোন প্রকার বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট অধিক মুনাফার লোভে জনবহুল এলাকায় এভাবে গ্যাস বিক্রি করলেও এ নিয়ে একেবারইে নীরব ভূমিকায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলিন্ডার ভর্তি কাভার্ডভ্যান থেকে পাইপ টেনে নিয়ে মিটারের মাধ্যমে সিএনজিচালিত গাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি কার্ভাডভ্যানে ৩৫ লিটারের ১৫-২০টি গ্যাস সিলিন্ডার বসানো হয়েছে। গ্যাস নিতে আসা গাড়ির কারণে প্রতিনিয়ত ওইসব স্থানে যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে ওইসব সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জানা যায়, কাভার্ডভ্যানে গ্যাস সিলিন্ডার স্থাপনের কাজটি করা হয় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায়। তিন টন ওজনের প্রতিটি কাভার্ডভ্যান মাসিক ৪০-৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া করা করার পর প্রতিটি সিলিন্ডার ২০ হাজার টাকা করে কিনতে হয়। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব সিলিন্ডার সরবরাহ করেন। প্রতিটি ৯০ ঘনমিটারের ৫০টি সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাগে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিএনজি অটোরিকশা চালক জানান, তাদেরকে স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে অনেক চড়া দামে গ্যাস কিনতে হয়। অনুমোদিত একটি গ্যাসস্টেশন থেকে যে গ্যাস ২শ টাকায় পাওয়া যায়, ভ্রাম্যামাণ গ্যাসস্টেশন থেকে সেই গ্যাস ৩৫০-৪০০ টাকায় কিনতে হয়। এদিকে, মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চালানো নিষেধ থাকায় অনুমোদিত গ্যাসস্টেশনে যেতে পারি না। তাই বাধ্য হয়ে ভ্রাম্যমাণ গ্যাসস্টেশন থেকে গ্যাস সংগ্রহ করতে হয়। সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এস এম হুমায়ুন কার্ণায়েন বলেন, কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে গ্যাস বিক্রির ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস থেকে কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি। ফায়ার সার্ভিস ফায়ার সেফটি না দেখে ভ্রাম্যমাণ কোন প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস কিংবা জ্বালানি সামগ্রী ব্যবসার অনুমতি দিবে না। এভাবে গ্যাস বিক্রি করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হতে পারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। যারা এসব ব্যবসা করছেন তারা দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করছেন। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান হাবিব জিতু বলেন, কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে গ্যাস বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।