লোহাগাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত সাইফুল

গ্রামের বাড়িতে হৃদয়বিদারক দৃশ্য

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ায় দুই দফা জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। গতকাল বুধবার দুপুর আড়াইটায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম স্টেডিয়ামে প্রথম ও বাদে আছর চুনতি ইউনিয়নের ফারাঙ্গা লতাপীর মাজার সংলগ্ন মসজিদ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে শরিক হন। দাফনকালে স্বজন, সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের চোখের জলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এর আগে দ্বিতীয় দফা জানাজার পূর্বে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান, বান্দরবান জেলা জামায়াতের আমীর এস এম আবদুস ছালাম আজাদ, এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন, কাজী নাছির উদ্দিন, মোহাদ্দেছ শাহ আলম ও এডভোকেট আলিফের পিতা জামাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এসময় বক্তারা এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুতসময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

দাফনের পরে কবর জেয়ারত করেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর শাহজাহান চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি প্রমুখ। পরে তারা এডভোকেট আলিফের পিতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এই সময় সারজিস আলম বলেন, শান্তি, সম্প্রীতি এবং অগ্রগতি রক্ষায় যে যাত্রা অন্তর্বর্তী সরকার শুরু করেছে তাকে বানচাল করার জন্য একটি অপশক্তি জেগে উঠেছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। কোনো উগ্রবাদের স্থান বাংলাদেশে হবে না। এই পর্যন্ত যতগুলো সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটি ঘটনার বিচার হবে। যদি সাধারণ আইনে না হয়, তাহলে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অপকর্মকারীদের বিচার করা হবে। সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে যে শঙ্কা ও ভীতি রয়েছে, সেটি দূর করতে চাই। উগ্রবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রুখে দাঁড়াতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আলিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা ভুলে যাই নাই আওয়ামী লীগের সহায়তায় এই ইসকন কিভাবে গত ১৬ বছর জঙ্গী সংগঠন হিসেবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হয় আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিব।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে সকল ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। যে হিন্দু, সে হিন্দু ধর্ম পালন করবে। যে বৌদ্ধ, সে বৌদ্ধ ধর্ম পালন করবে। যে খ্রিস্টান, সে খ্রিস্টান ধর্ম পালন করবে। আমরা সবার অধিকার রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করলে বাংলাদেশে কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা
পরবর্তী নিবন্ধরয়টার্সের প্রতিবেদনে উদ্ধৃত করা সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি