অনাবৃষ্টির কারণে এবার রাঙামাটিতে লিচুর আকার ছোট হয়েছে। ফলনও কম হয়েছে। এতে করে ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। ফলে বাগান মালিক ও চাষিরা হতাশ। তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
রাঙামাটি কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে রাঙামাটিতে ১৮৮২ হেক্টর জমিতে ১৬,৯৩৮ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮৮২ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদন হয়েছিল ১৫,৯৯৭ মেট্রিক টন। রাঙামাটি সদর উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের লিচু বাগান মালিক সবির কুমার চাকমার বাগানে ১শ লিচুগাছ রয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো না হওয়ায় লিচুর উৎপাদন খুব ভালো হয়নি। দামও তেমন পাইনি। অন্যান্য বছর ব্যবসায়ীরা সরাসরি বাগানে এসে ফল পাকার আগে পুরো বাগান কিনে নিয়েছিলেন। এ বছর তারা আসেননি। লিচুর সাইজ ছোট হওয়ায় বাজারে বিক্রি করতে গিয়েও ন্যায্য দাম পাইনি।
সরেজমিনে রাঙামাটি শহরের বনরুপা সমতাঘাটে দেখা গেছে, আকার ভেদে ১শটি দেশি লিচু ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছরও এই লিচুর দাম ছিল ৮০-১০০ টাকা। চায়না-৩ লিচু বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৫০ টাকায়। গত বছর উন্নত জাতের সুস্বাদু এই লিচু বিক্রি হয়েছিল ২০০-২৫০ টাকায়।
রাঙামাটির বন্দুভাঙ্গা ইউনিয়নের প্রান্তিকা চাকমা বলেন, এবার আমার বাগানে লিচুর ফলন কম হওয়ায় মাত্র ৬০ হাজার টাকায় বাগান বিক্রয় করতে হয়েছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
একই ইউনিয়নের হারেক্ষং গ্রামের শান্ত কুমার চাকমা (৪০) বলেন, গত বছর লিচু বিক্রি করে এক লাখ টাকা পেয়েছিলাম। এবার অর্ধেকও দাম পাইনি। লিচু আকারে ছোট হয়েছে, তাই দাম পাইনি।
রাঙামাটি শহরের বনরুপার ফল ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, করোনার ভয়ে ব্যবসায়ীরা এ বছর রাঙামাটিতে আসতে পারেননি। স্থানীয় ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কিছু ফল কিনে ব্যবসা চালাচ্ছি।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, লিচু আকারে ছোট হয়েছে অনাবৃষ্টির কারণে। করোনা মহামারির কারণে কৃষক নায্য দাম পাচ্ছে না। তবে চাহিদা থাকার কারণে বাজারে মোটামুটি দাম রয়েছে। তিনি জানান, ফলন ভালো হওয়ার জন্য কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে।