আজ রোববার বিকেলে বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেবা সংগঠন লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনালের অক্টোবর সেবা মাসের কার্যক্রম। গতকাল শনিবার এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে এবারকার সেবা মাসের এ্যাকশন প্ল্যান এবং অতীতের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ বি ৪ এর গভর্নর লায়ন এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই সেবা সংগঠনে সূর্য অস্ত যায় না। পৃথিবীর কোথাও না কোথাও রাতে দিনে চব্বিশ ঘণ্টাই লায়ন সদস্যরা কোনো না কোনো মানুষের সেবা করে চলেছেন। চট্টগ্রামেও ৮০টিরও বেশি ক্লাবের প্রায় আড়াই হাজার লায়ন সদস্য সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সামনের দিনগুলোতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন লায়ন গভর্নর। তিনি বলেন, আমরা পুরো বছরই সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করি। তবে অক্টোবর সেবা মাস হিসেবে বিশ্বের লায়নিজমে স্বীকৃত। তাই এই মাসে আমরা সবচেয়ে বেশি কাজ করি। এক একটি ক্লাব একাধিক সার্ভিস প্রোগ্রাম করে থাকে। প্রতিদিন ৩/৪টি ক্লাবও বড় পরিসরে সেবার দ্বার উন্মুক্ত করে। গতকাল দুপুরে নগরীর জাকির হোসেন রোডস্থ লায়ন্স ফাউন্ডেশনের হালিমা রোকেয়া হলে প্রেস কনফারেন্স কমিটির চেয়ারম্যান লায়ন শাহেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি লায়ন সাংবাদিক হাসান আকবরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দ্বিতীয় ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ অপু এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রথম ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন কোহিনুর কামাল।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া, লায়ন নাজমুল হক চৌধুরী, লায়ন সিরাজুল হক আনসারি, শেখ সামশুদ্দীন আহমেদ সিদ্দিকী, কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন আবু বক্কর সিদ্দিকী, কেবিনেট ট্রেজারার লায়ন ইমতিয়াজ ইসলাম, অক্টোবর সার্ভিস মাসের সভাপতি লায়ন এস এম আবু তৈয়ব, সাবেক কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন আশরাফুল আলম আরজু, লায়ন আবু মোরশেদ, লায়ন হারুন ইউসুফ, লায়ন নুরুল আলম, লায়ন জাহাঙ্গীর মিঞা, লায়ন সৈয়দ মোর্শেদ হোসাইন, লায়ন এডভোকেট নুরুল ইসলাম, লায়ন পারভীন মাহমুদ, লায়ন নিশাত ইমরান, লায়ন শুভ নাজ জিনিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
‘শান্তি ও সমৃদ্ধির অন্বেষায়’ কল’র প্রবর্তক লায়ন এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা লায়ন সদস্যরা সমাজের সব সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন করতে পারব না। আমাদের সক্ষমতা সীমিত। তবে আমরা সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে আমাদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা করি। লায়ন্স সদস্যদের মতো সমাজের সব বিত্তবান যদি ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই তাহলে এই সমাজ আরো অনেক বেশি বাসযোগ্য হবে। তিনি বলেন, কাল (রোববার) বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে নগরীর জিইসি মোড় থেকে বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে আমাদের সেবা মাসের উদ্বোধন করা হবে। জিইসি মোড় থেকে জাকির হোসেন রোডের লায়ন্স কমপ্লেঙ পর্যন্ত এই র্যালি অনুষ্ঠিত হবে।
লায়ন গভর্নর বলেন, বিশ্বে লায়নিজমের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯১৭ সালে। আমেরিকার শিকাগো শহরে মানবহিতৈষী বিমা কর্মকর্তা মেলভিন জোন্সের উদ্যোগে সেবার মহান লক্ষ্য নিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তা গত একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক এই সেবা সংগঠনে বর্তমানে ১৪ লাখের বেশি মানুষ জড়িত। যারা বিশ্বব্যাপী লায়নিজমের পতাকা সমুন্নত রেখে মানবকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ১৯৫৮ সালে লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং এর মাধ্যমে এদেশে লায়নিজমের সূচনা হয়। স্বাধীনতার পর সাবেক মন্ত্রী এম আর সিদ্দিকী এদেশে লায়নিজমের সূচনা করেন। তিনিই বাংলাদেশে লায়নিজমের জনক। ৬৫ বছর আগে এই চট্টগ্রাম থেকেই বাংলাদেশে লায়নিজমের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেই যাত্রা আজও অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রামের আড়াই হাজারেরও বেশি লায়ন সদস্য এবং প্রায় দেড় হাজার লিও সদস্য স্ব স্ব ক্লাবের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, কঙবাজারসহ সন্নিহিত অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে। এই যাত্রা সামনের দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলেও লায়ন গভর্নর এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।