লামা পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান তিন দলের মনোনীত ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. শাহিন এবং জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদার। প্রতিদ্বন্দ্বী ৩ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বেশি নগদ টাকার মালিক বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. শাহিন এবং সব চেয়ে কম নগদ টাকার মালিক আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম। বিএনপি ও জাপা সমর্থিত প্রার্থীর নামে রয়েছে মামলা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী পেশায় ব্যবসায়ী হলেও জাপা সমর্থিত প্রার্থী নিজেকে চিকিৎসক ও বীমা কর্মী হিসেবে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
লামা পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দাখিলকৃত হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. শাহিন তার হলফ নামার অস্থাবর সম্পদ বিবরণীতে তার কাছে নগদ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আরো ২ লক্ষ টাকা জমা আছে মর্মে উল্লেখ করেন। জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদারের কাছে নগদ ৪০ হাজার, তাঁর স্ত্রীর কাছে ২০ হাজার এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা জমা আছে মর্মে হলফনামা উল্লেখ করেন। অপর দিকে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলামের কাছে নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা জমা আছে মর্মে উল্লেখ করেন।
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি এইচএসসি পাস। তার বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৪) ধারায় লামা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা রয়েছে। যা বর্তমানে তদন্তাধীন। তাঁর পেশা ব্যবসা। এ খাত হতে তিনি বছরে গড়ে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পত্তিতে নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ব্যতিত একটি মোটর সাইকেল, নিজের নামে ১০ ভরি এবং স্ত্রীর নামে ১০ ভরি করে স্বর্ণালংকার রয়েছে। এছাড়া ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র রয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কোন স্থাবর সম্পদ নেই মর্মে তিনি হলফ নামায় উল্লেখ করেন।
জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী এ টি এম শহিদুল ইসলাম সিকদারের হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি এম কম পাস। তার বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর বিভিন্ন ধারায় লামা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জি.আর ৮৫/২০১৮ মামলা রয়েছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। তার হলফনামায় তিনি নিজেকে চিকিৎসক ও বীমা কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন। চিকিৎসক হিসেবে তার বার্ষিক আয় ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৭৪০ টাকা এবং বীমা কর্মী হিসেবে বার্ষিক আয় ১ লক্ষ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তিতে নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ব্যতিত ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার, ৪০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিঙসামগ্রী এবং ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেছেন। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ২০ শতক কৃষি জমি ও ৫ শতক অকৃষি জমি আছে মর্মে উল্লেখ করেছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলামের হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি বি এ পাস। তাঁর বিরুদ্ধে কোথাও কোন মামলা মোকাদ্দমা নেই। তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি। ব্যবসা খাতে তাঁর বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাতের আয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তিতে নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ব্যতিত স্ত্রীর কাছে বিবাহ সূত্রে প্রাপ্ত ২০ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে ও ঘরের আসবাবপত্র এবং ইলেকট্রনিঙসামগ্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তিনি দুই একর কৃষি জমি ও একটি পাকা বাড়ি আছে মর্মে হলফনামায় উল্লেখ করেন।