লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা–ত্রিডেবা সড়ক চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে এ সড়কে চলাচলকারী ৭ হাজারের অধিক মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ইয়াংছা–ত্রিডেবা সড়কটি উপজেলার ৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড এবং ৯ নং ওয়ার্ডের ২৫টি পাড়ার ৭ হাজারের অধিক লোকের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। এছাড়া ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি জুনিয়র হাই স্কুলের ছাত্র–ছাত্রী ও শিক্ষক–শিক্ষিকাসহ স্থানীয় মৌসুমী ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার লোকজনও এ সড়ক পথে নিয়মিত চলাচল করে থাকেন। ১৯৯৬ সালের দিকে সড়কটি ব্রিক সলিংয়ের মাধ্যমে উন্নীত হওয়ার পর একাধিকবার সংস্কার করা হয়। পরিকল্পনাহীন প্রাক্কলন, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের যথাযথ তদারকির অভাব এবং ঠিকাদারী অনিয়মের কারণে এ সকল সংস্কার কখনোই টেকসই হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বর্তমানে সড়কটি চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পুরো সড়ক জুড়ে ইটের সলিং উঠে গিয়ে অসংখ্য খানা–খন্দক সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙন ও মাটি ধ্বসে পড়ে আরো বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যা স্থানীয়দের চলাচলে চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সড়ক ছাড়া স্থানীয়দের চলাচলে বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে চলাচল অযোগ্য এ সড়ক দিয়েই তাদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে তাদেরকে হিমসীম খেতে হচ্ছে। জরুরি মুহুর্তে মুমূর্ষ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরসহ অন্যান্য স্থানে নিয়ে যেতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ত্রিডেবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তার উদ্দিন তপন বলেন, ইয়াংছা–ত্রিডেবা সড়ক পথে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুর–দূরান্ত থেকে বিদ্যালয়ে আসা কোমলমতি ছাত্র–ছাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। মাঝে মধ্যে সড়কের গর্তে চাঁদের গাড়িগুলো আটকে গিয়ে দিনের বেশির ভাগ সময় পুরো সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। খানা–খন্দকে ভরা এ সড়কে কিছু পথ মোটরসাইকেলে আবার কিছু পথ হেঁটে চলাচল করতে হয়।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আপ্রুচিং মার্মা বলেন, সড়কটির অত্যন্ত বেহাল দশা। অসুস্থ রোগী, স্কুল–মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক–শিক্ষিকাসহ স্থানীয়দের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি মেরামত কিংবা পুনঃ নির্মাণের দাবি জানান। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল হোছাইন চৌধুরী বলেন, সড়কটি এলজিইডির মাধ্যমে সংস্কারের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি সড়কটির বেহাল দশার জন্য বাঁশ–গাছ ও পাথর বোঝাই ভারি যানবাহন চলাচলকে দায়ী করেছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু হানিফ বলেন, সড়কটি কার্পেটিং সড়কে উন্নীত করার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।