লামায় আবারও ২৫ রাবার শ্রমিক অপহৃত

লামা প্রতিনিধি | রবিবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ১০:২২ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের লামায় আবারও ২৫ জন রাবার শ্রমিককে অপহরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা মুরুং ঝিরির পাঁচটি রাবার বাগান থেকে তাদের অপহরণ করা হয়।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অপহৃতরা সবাই রাবার বাগানের শ্রমিক (ট্রেপার) হিসেবে কাজ করতেন। অপহরণকারীরা বাগান মালিক ও স্বজনদের নিকট মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে।

লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, শ্রমিক অপহরণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ উদ্ধার অভিযানে চালাচ্ছে।

বাগান মালিকরা জানান, সম্প্রতি পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বেশ কয়েকটি অপহরণের ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ সম্প্রতি লামার দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত গভীর রাতে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার ফোরকান ও শাহজাহান, নুরু মোহাম্মদ কম্পানি, আহসান উল্লাহ কম্পানি, হুমায়ুন কম্পানি ও সোনামিয়া কম্পানি মালিকানাধীন পৃথক পাঁচটি রাবার বাগান থেকে ২৬ জন রাবার শ্রমিককে অপহরণ করে তারা।

অপহৃতরা সবাই কক্সবাজার জেলার রামু ও টেকনাফ এবং বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। তারা ওই সব রাবার বাগানে ট্রেপার (রাবার কস সংগ্রহকারী) হিসেবে কাজ করতেন।

অপহৃতরা হলেন- মো. ফারুক (২৬), মো. আইয়ুব আলী (২৬), মো. সিদ্দিক (৪০), মো. আব্দুল খালেক (২০), আব্দুল মাজেদ (১৭), মনিরুল ইসলাম (৩০), জিয়াউর রহমান (৪৫), মো. মোবারক (২৫), মো. হারুল (৩০), সৈয়দ নুর (২৮), রমিজ উদ্দিন (৩০), মো. কায়ছার (৩৮), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. ইমরান (১৭), মঞ্জুর (৩০), আফসার আলী (২৫), মো. খাইরুল আমিন (৩০), আবু বক্কর (২৯), আবদুর রাজ্জাক (৩৩) ও মো. মবিন (২৫)। অপর কয়েকজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

রাবার বাগান মালিক মো. শাহজাহান জানান, সন্ত্রাসীরা তার বাগানের ট্রেপারদের কাছে ইতিপূর্বে ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। চাঁদা না পেয়ে তার বাগানের ১২ ট্রেপারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের জন্য ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।

সন্ত্রাসীরা অপহৃত অন্যদের কাছ থেকেও পৃথক মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মংমেগ্য মারমা জানান, ২৫ রাবার ট্রেপার অপহরণের ঘটনায় রাবার, তামাক, গাছ, পাথর, বাঁশ শ্রমিকসহ স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানে ভালো নেটওয়ার্ক না থাকায় বিস্তারিত জানা যাচ্ছে না।

গত ০২ ফেব্রুয়ারি গজালিয়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার কমলা বাগান থেকে চয় কাঠ শ্রমিক এবং ১৪ জানুয়ারি দুর্গম বমু খাল এলাকার তিনটি খামারবাড়ি থেকে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা সাতজন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া এক বাগান ম্যানেজারকেও অপহরণ করা হয়েছিল। এসব অপহৃতদের কেউ কেউ যৌথ বাহিনীর অভিযান এবং অনেকে মুক্তিপণ দিয়ে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে মুক্তি পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবারো সেরাদের তালিকায় এসিআই চুয়েট
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে সীমান্তে অবিস্ফোরিত মর্টার শেল উদ্ধার