কথা ছিল– আমরা একসাথে মাড়িয়ে যাবো ছায়াপথ,
অনন্তকাল ধরে। তুমি আমার কালো মেঘের নিখাদ
আলোর শশী। তোমার চোখের গভীরে লুকিয়ে থাকা
সমুদ্রের অনিবার্য প্রলয় তরঙ্গ তোলে আমার মনে।
আশায় থাকি নতুন দিন ফুটবে আবার নতুন স্বপ্নের।
যদিও– চলতি পথে কোথাও হারিয়ে যায় কিছু প্রিয়মুখ।
সুখের ঘরে মেঘলা হাওয়ার শোক জমতে থাকে জীবন সায়াহ্নে।
স্বপ্নগুলো নোঙর ফেলা জাহাজগুলোর দিকে ছুটছে কেবল।
একদিন পুরো শহরজুড়ে কৃষ্ণচূড়ার মিছিল হবে। থাকবে
কদমফুলের প্রেমময় আয়োজন আর শহরের পথে পথে
সরব হবে রজনীগন্ধা–গোলাপের মালা। হৃদয়–সিংহাসন
ভেসে যায় স্রোতের কলস্বরে। ছটফট করছে বন্দী দুরন্ত সময়।
উজানি নৌকো থেকে ছিটকে পড়ে কিছু স্বপ্ন অতলজলে।
যেগুলো আগলে রেখেছিলাম পৃথিবীর বিভৎস বাতাস থেকে
আড়াল করে। জীবনকে শরৎকালের পশ্চিমাকাশের সূর্যাস্তের
মতো, ক্ষণিক মহাসমারোহে চাদর মুড়ি দিয়ে রাখার চেষ্টা করছি
অবিরত। চোখের মাপের চিলতে আকাশে বাঙবন্দী ব্যাকুলতা
চাপা আর্তনাদে পটভুমি পাল্টায়। মুঠোর মাঝে রাখা সেই
কথাগুলি যেন পদ্মপাতার কোণে আটকে থাকা শেষ রাতের
শিশিরবিন্দু–আলোর ছোঁয়ায় উধাও হয়ে যায়, তবু রোদ্দুরে
ঝিলমিল স্মৃতির মতো থেকে যায় চোখের কোণে।
স্থির ধৈর্যের প্রকৃতিতে চিরল পাতার ফাঁক দিয়ে নেমে আসে
রোদের গলে পড়া বিষাদ, আর বৈরী মাতাল বাতাসে
ছড়িয়ে পড়ে এক নিঃশব্দ শোকের ঘ্রাণ।