সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের রোড এবং রেল সেক্টর দুই দিক থেকেই কানেক্টিভিটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি আরও নতুন নতুন দুয়ার উন্মোচিত হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে। এর ফলে উভয় দেশই লাভবান হয়েছে। এই কথাগুলো আমাদের আজকে স্বীকার করতে হবে। আমি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে, আমাদের জাতীয় স্বার্থে এবং আমাদের উন্নয়নের স্বার্থে। গতকাল সকালে রাজধানীর সড়ক ভবন থেকে ‘বারৈয়ারহাট–হেঁয়াকো–রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশের কানেক্টিভিটির বন্ধন রচিত হয়েছিল। কিন্তু ৭৫ এর পরে থেকে দীর্ঘ ২১ বছরে সন্দেহ আর অবিশ্বাসের কারণে বাংলাদেশ এবং ভারতের কানেক্টিভিটিতে ছেদ পড়েছিল। আর এই ছেদ দূর হয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির দুর্দান্ত নেতৃত্বের কারণে। বর্তমানে ভারত বাংলাদেশের সেই ব্যবধান আমরা অনেকটা দূর করতে পেরেছি। তবে এখনো কিছু কিছু সমস্যা আমাদের মধ্যে আছে। আমি মনে করি আমাদের দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যদি বন্ধুত্বপূর্ণ থাকে এবং আলাপ আলোচনা আরও বিস্তৃতি ঘটে তাহলে যত সমস্যা আছে তা দূর হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, লাইন অফ ক্রেডিটের (এলওসি) মাধ্যমে বাংলাদেশে বেশ কিছু ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে এগিয়ে এসেছে ভারত। ‘বারৈয়ারহাট– হেঁয়াকো–রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন’ সেটাও এলওসির একটি প্রজেক্ট। একই সঙ্গে রামগড়ের মৈত্রী সেতু হয়ে গেছে। এর ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে সংযোগ বাড়বে। পাশাপাশি কঙবাজার এয়ারপোর্টের বর্ধিতকরণের কাজ প্রায় শেষ দিকে। পাশাপাশি ঢাকাতেও তৃতীয় টার্মিনাল করা হয়েছে, যা অক্টোবরের দিকে সফট ওপেনিং করার সম্ভাবনা আছে।
তিনি আরো বলেন, নরেন্দ্র মোদি তিনি যখন ক্ষমতায় আসেন তখন ভারতের পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন অনুমোদন হয়েছে। তখন কেউ এই বিষয়ে কোনো আপত্তি করেনি। ভারত সর্বসম্মতিক্রমে আমাদের সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছে। এটা একটা ঐতিহাসিক কাজ। আমরা যদি পারস্পরিক সম্পর্কের সংশয়ের দেয়ালটা না ভাঙতাম তাহলে কিন্তু এটা করা সম্ভব ছিল না।
রামগড় অংশে যুক্ত হয়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি আসনের সংসদ সদস্য এবং শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, ভারতের সাথে আমাদের কথা বলার সম্পর্ক না। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে, হৃদয়ের। সেটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে প্রমাণ করে দিয়েছে ভারত। আজকে ‘বারৈয়ারহাট–হেঁয়াকো– রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ হয়ে ভারত–বাংলাদশের উভয় দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য গতি পাবে।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, এই রামগড় স্থলবন্দর বেনাপোলের চেয়ে আরো বেশি কার্যকর ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ হবে। এর ফলে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। গভীর সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। ভারতের সাতটি রাজ্য এবং ভুটান এবং নেপালেও আমাদের বাণিজ্য বাড়বে।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, ফটিকছড়ি আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম, রামগড় অংশে যুক্ত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক, খাগড়াছড়ির পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ এইচ এম আবু তৈয়ব, রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কার্বারী (ত্রিপুরা), চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা, খাগড়াছড়ি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান প্রমুখ।












