রেল কর্মকর্তা ফয়সালের রিমান্ড চাইবে দুদক

দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৮ মে, ২০২১ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মচারীদের দুই কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত জুনিয়র হিসাব কর্মকর্তা ফয়সাল মাহবুবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে দুদকে দায়ের হওয়া মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। গত ১২ মে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর (সজেকা-১) উপ-সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে মামলাটি (মামলা নং-৭) দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ করা হয়। এর আগে গত ৮ মে রাতে ফয়সাল মাহবুবকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা।
জানা যায়, জুনিয়র অডিটর ফয়সাল মাহবুব বাংলাদেশ রেলওয়ে পাহাড়তলী হিসাবায়ন ইউনিটের অধীনে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। বাংলাদেশ রেলওয়েতে আইবাস প্লাস প্লাস (আইবাস++) সিস্টেমের মাধ্যমে বেতন ভাতা পরিশোধের হিসাব সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। এই সফটওয়্যারে কাজ করার সুযোগে ফয়সাল মাহবুব বিভিন্ন ডকুমেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা, উৎসব বোনাস পরিশোধ দেখিয়ে বিলের টাকা নিজের ব্যাংক হিসেবে সরিয়ে নিতেন। গত ৭ মে বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী জাহেদ আরেফিন পাটোয়ারি তন্ময় তার উৎসব ভাতার বিষয়ে আইবাস++ সিস্টেমে অস্বাভাবিকতা দেখতে পেয়ে বিষয়টি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডেপুটি ফাইনান্সিয়াল এডভাইজার ও প্রধান হিসাব অধিকর্তাকে অবহিত করেন। এরপর প্রধান হিসাব অধিকর্তা একজন বিশেষজ্ঞ ডেকে আইবাস++ সিস্টেমে বেশ কিছু অসংগতিপূর্ণ ট্রানজেকশন চিহ্নিত করেন। প্রাথমিকভাবে ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে ভুয়া বিল দাখিল ও পাসের মাধ্যমে আইবাস++ সিস্টেমে বিল পরিশোধ করা হলেও এসব অর্থ জুনিয়র অফিসার তার নিজের ব্যাংক হিসেবে ট্রান্সফার করে উত্তোলন করে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। এতে প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়ে ৮ মে ফয়সালকে আটক করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) হাতে তুলে দেওয়া হয়। ৯ মে লিখিত অভিযোগ সহকারে তাকে খুলশী থানার হাতে সোপর্দ করা হয়। বিষয়টি দুদক আইনের হওয়ার কারণে খুলশী থানা অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে এন্ট্রি করে আটক আসামি ফয়সাল মাহবুবকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১২ মে দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে চট্টগ্রাম সজেকা-১ এ অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইবাস++ সিস্টেমে ভুয়া বিল দাখিল করে নিজ হিসেবে প্রায় দুই কোটি টাকা জমা করে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
এ ব্যাপারে দুদক সজেকা-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবীর চন্দন সোমবার সন্ধ্যায় দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতার প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় কারাগারে থাকা জুনিয়র কর্মকর্তা ফয়সাল মাহবুবকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার সাথে আরও কারা কারা জড়িত সে বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য তাকে জিজ্ঞাসবাদের প্রয়োজন। এজন্য আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডও চাইব।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় রাবার বাগানের গুদাম গ্যারেজে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধদেশে এক দিনে আরো ৩২ মৃত্যু