রেজা কিবরিয়াকে আহ্বায়ক করে গণ অধিকার পরিষদের আত্মপ্রকাশ

৪ মূলনীতি, ২১ দফা ঘোষণা

| বুধবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার পল্টনের জামান টাওয়ারে এক অনুষ্ঠানে এই দল ঘোষণা করেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়াকে আহ্বায়ক ও নুরকে সদস্য সচিব করে ৮৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ সময় দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান চার মূলনীতি ও ২১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। চার মূলনীতি হল- গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ। খবর বাংলানিউজের। আর প্রথম দফা কর্মসূচি হল- গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয় দফা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ন্যায়বিচার ও সুশাসন। বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা, পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। তৃতীয় দফা হচ্ছে নারী অধিকার। সব বাধা দূর করে নারী প্রশ্নে সমতা প্রতিষ্ঠাকে অগ্রগণ্য লক্ষ্য ঘোষণা করে তা অর্জন করতে হবে। নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্যের বিলোপ সাধন করা। সংসদ, সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ আসন নারীদের জন্য নির্দিষ্ট করা। চতুর্থ দফা হচ্ছে- দেশে স্বাধীন বিকাশ অনুকূল, মর্যাদাপূর্ণ পরিস্থিতি ও ভীতিহীন পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। যাতে বিশাল সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর শাসনেও কেউ অস্বস্তি বোধ না করেন। পঞ্চম দফা- শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিমূলক সরকার ও গণপ্রতিনিধিত্বশীল কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় গঠনতান্ত্রিক সংস্কার সম্পন্ন করা। ষষ্ঠ দফায় স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন, দুর্নীতি প্রতিরোধকে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার দেওয়া এবং দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বর্জনের সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা। সপ্তম দফায় গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা সম্পর্কে বলা হয়েছে- বাক, ব্যক্তি, চিন্তা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত সাংবাদিকতার সুরক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টের মতো সব দমন ও নিপীড়নমূলক গণবিরোধী আইন বাতিল করা। অষ্টম দফায়- বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ও মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন প্রদানকারী, দুর্নীতি ও ঋণের ফাঁদে জড়াবে না তেমন অর্থনৈতিক সহযোগিতাকারী, সামরিক জোটভুক্ত করতে চাপ দেবে না তেমন রাষ্ট্রের সঙ্গে চলার বন্ধুত্বাভিমুখী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে। নবম দফায় প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে বলা হয়েছে- নাগরিক ও মৌলিক অধিকারহীন স্বাধীনতা এবং জনগণের ভরসা হারানো সার্বভৌমত্বকে আপন মহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য স্বদেশপন্থী দৃঢ় এক প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করে, তা কঠোরভাবে পালন করা। দশম দফায় কৃষির আধুনিকায়ন, একাদশ দফাতে শিল্প বিকাশ, দ্বাদশ দফাতে আর্থিক খাত ও উন্নয়ন প্রশাসন, ত্রয়োদশ দফায় শ্রম অধিকার, চতুর্দশ দফায় জনশক্তি রপ্তানি সম্পর্কে বলা হয়েছে। আর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে পঞ্চদশ দফায় বলা হয়েছে- দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর কর্মমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা। ষোড়শ দফায় সামাজিক নিরাপত্তা, ১৭তম দফায় পরিবহন ও যাতায়াত, ১৮তম দফায় জনস্বাস্থ্য সেবা, ১৯তম দফায় দখল ও দূষণ প্রতিরোধ, ২০তম দফায় খাদ্য ও পুষ্টি এবং সর্বশেষ ২১তম দফায় জ্বালানি, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার নিয়ে বলা হয়েছে।
কমিটিতে যারা আছেন
দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়াকে। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে নুরকে। এ ছাড়া দলটির ৮৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ২২ জন। তারা হলেন- মো. রাশেদ খান, ফারুক হাসান, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, অ্যাডভোকেট খাদেমুল ইসলাম, মো. আল মামুন, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, মুফতি নুরুল ইসলাম শোয়াইবী, ঝুনু রঞ্জন দাস, মাহফুজুর রহমান খান, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ জিশান মহসীন, আবু হানিফ, সোহরাব হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, শাকিল উজ্জামান, নাজমুস সাকিব, জসিম উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, আরিফুল ইসলাম, কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম, হানিফ খান সজিব, আরিফুর রহমান তুহিন, আফজাল হোসেন। এছাড়া ১৫ জনকে সহকারী যুগ্ম-আহ্বায়ক, ৮ জনকে যুগ্ম সদস্য সচিব, ২২ জনকে সহকারী সদস্য সচিব এবং ১৪ জনকে রাখা হয়েছে আহ্বায়ক কমিটিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্ত ৯ মৃত্যু ১
পরবর্তী নিবন্ধদীঘিনালায় ৩ ইউপিতে ১ নারী, ২ পুরুষ