বান্দরবানের রুমা উপজেলায় ১৯৩ টি গির্জায় খ্রিষ্টান সমপ্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের জন্য সরকারের বিশেষ বরাদ্দের প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তের দাবিতে গত বুধবার জেলার ক’জন শীর্ষ যাজক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জেলা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীরা জানান, ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের জন্য আর্থিক সহায়তা হিসেবে রুমা উপজেলায় ১৯৩টি গির্জার জন্য ৯৬ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয় ত্রাণ মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা হিসেবে এই খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য প্রতি টন ৪৪ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করে খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের ধর্মীয় গির্জাগুলোতে নগদ অর্থ প্রদান করার কথা ছিল। নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রাপ্ত খাদ্যশস্য বিক্রি করে ৪২ লাখ ৯১ হাজার ২শ’ টাকা নগদ পাওয়া যায়। তবে বড়দিনের আগে এবং পরে দু’দফায় ১৯৩টি গির্জার দায়িত্বশীলদের ৩২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এতে অবশিষ্ট আরো ১০ লাখ ৪৫ হাজার ২শ’ টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতাদের।
অভিযোগকারীদের মধ্যে অন্যতম প্রেসবিটারিয়ান চার্জের প্রধান রেভারেন্ড লালজার লম বম বলেন, জেলার অন্য উপজেলার গির্র্জাগুলোকে ২২ হাজার ৩শ’ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রুমাবাসী বরাদ্দের সম্পূর্ণ টাকা পায়নি। রুমায় ১৯৩টি গির্জায় বড়দিনের আগে প্রথম দফায় ১৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। বড়দিনের পরে দ্বিতীয় দফায় ১১৭টি গির্জার জন্য ৩ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। বাকিটা কোথায় বিষয়টি আমরা রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও’র কাছে স্বশরীরে গিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইউএনও বিষয়টির সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি। তবে রুমা উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: ইয়ামিন হোসাইন বলেন, খ্রিষ্টান সমপ্রদায়ের যাজকরা কি অভিযোগ দিয়েছেন, তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমীন পারভীন তিবরীজি বলেন, রুমায় খ্রিস্টান সমপ্রদায়ের বড়দিন উদযাপনের জন্য বরাদ্দ দেয়া অনুদানের টাকা বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।