রুমায় অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার

কেএনএফের সঙ্গে আলোচনায় না বসার সিদ্ধান্ত শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির

বান্দরবান প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৫ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাহাড় থেকে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে রুমার বেতেল পাড়া থেকে সুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (সহকারী কমিশনার ভূমি) দিদারুল আলম জানান, অপহরণের ৩ দিনের মাথায় রুমা উপজেলার বেতেল পাড়া থেকে যৌথ বাহিনী অপহৃত ম্যানেজারকে উদ্ধার করেছে। অপহৃত ম্যানেজার সুস্থ রয়েছেন। তিনি বর্তমানে রুমা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে রয়েছেন।

কেএনএফের সঙ্গে আলোচনায় না বসার সিদ্ধান্ত : অপরদিকে বান্দরবানের তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় কেএনএফের সঙ্গে আলোচনায় না বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবানে পার্বত্য জেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে কেএনএফের সামপ্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি’র এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, কেএনএফ শান্তি আলোচনার শর্তভঙ্গ করেছে। অবৈধ অস্ত্র জমা দিয়ে শান্তির পথে ফেরার শর্তে একমত পোষণ করছে না। শর্ত লঙ্ঘন করায় কেএনএফের সঙ্গে আলোচনা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। চলতি মাসের ২২ এপ্রিল কেএনএফের সঙ্গে মুখোমুখি সংলাপ হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল করা হয়েছে। তবে পাহাড়ের সহজ সরল সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় শান্তি কমিটির কার্যক্রম চালু থাকবে। এসময় অন্যদের মধ্যে শান্তি কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, সদস্য লালসাম বম, লেলুংখুমী, উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অপরাধীরা ছাড় পাবে না : বান্দরবানের রুমাথানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনায় জেলা জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সোনালী ব্যাংকের প্রধান এমডি আফজাল করীম এবং সকালে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা রুমা ও থানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এসময় ডিআইজি নুরে আলম মিনা বলেন, অপরাধী যেই হোক, তারা কোনো প্রকার ছাড় পাবে না। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান ছিল একটি অসমপ্রদায়িক চেতনা এবং সমপ্রীতি জেলা হিসাবে পরিচিত। অপরাধীদের ধরতে চিরুনি অভিযান চালাতে প্রস্তুত যৌথ বাহিনী। তিন পার্বত্য অঞ্চলের কয়েকটি উপজেলা বর্তমান সময়ের খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আইন শৃক্সখলা ঝুঁকি কমাতে কয়েকটি উপজেলায় আর ও দক্ষ জনবল মোতায়েন করা হবে। ফিল্ম স্টাইলে সরকারী সংরক্ষিত ব্যাংকের প্রবেশ করে হামলা ডাকাতি লুট করার বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। তাদের অন্তত তিনটি মামলার মাধ্যমে যারা অপরাধী তাদেরকে আইনের আওতা আনা হবে। তিনি আরও বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক নির্বিঘ্নে থানচি উপজেলায় ভ্রমণে আসতে পারে সে বিষয়ের প্রশাসন সজাগ এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ক্রাইম এন্ড অপারেশন্স শাখার অতিরিক্ত ডিআইজি নেছার উদ্দিন আহমেদ, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাযেমী, থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত: গত মঙ্গলবার রাতে রুমা উপজেলা সোনালী ব্যাংক শাখা লুট করেছিল সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এসময় পুলিশের ৮টি চায়না রাইফেল, ২টি এসএমজিসহ ১০টি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি, আনসার সদস্যদের ৪টা শর্টগান ৩৫ রাউন্ড গুলিসহ ১৪টি অস্ত্র লুট করেছে সন্ত্রাসীরা। তবে ব্যাংকের চাবি না পাওয়ায় ভল্টের ভেতরে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ লুট করতে পারেনি লুটেরা দল। এদিকে মসজিদ থেকে বেরুনোর পর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ভল্টের চাবি না দেয়ায় ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাংকে ডাকাতদের হামলার সময় বিদ্যুৎ কেন ছিল না তদন্ত হচ্ছে : র‌্যাব
পরবর্তী নিবন্ধস্ত্রীসহ মহল মার্কেটের মালিক জসিম উদ্দিনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা