ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার মামলায় আরো দুই আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহ গতকাল রোববার বিকালে তাদের চার দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া দুই আসামি হলেন মো. আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনির। প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী রিমান্ডের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদিন দুই আসামিকে আদালতে তুলে প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান। এ মামলায় বৃহস্পতিবার মাহমুদুল হাসান মহিনকে পাঁচ দিনের এবং শনিবার টিটন গাজীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত। এ ঘটনায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় বৃহস্পতিবার তারেক রহমান রবিনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রিমান্ড শেষে শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
বুধবার বিকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ও পুরনো তারের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে। পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ওই হত্যাকাণ্ডে যাদের অংশ নিতে দেখা গেছে এবং নেপথ্যে যাদের নাম আসছে, তারা সবাই পূর্ব পরিচিত। একসময় তাদের কয়েকজন সোহাগের ব্যবসার সহযোগী ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার মামলা করেন। এরপর পুলিশ মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর শুক্রবার কেরাণীগঞ্জ ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। একই দিন টিটন গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
হত্যার ঘটনায় মোট ৭ জন গ্রেপ্তার : ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। গতকাল বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশ–ডিএমপির উপ কমিশনার (মিডিয়া) তালেবুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সোহাগ হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ গ্রেপ্তার দুজন হলেন সজীব বেপারি (২৭) ও রাজিব বেপারি (২৫)। তাদের নেত্রকোনা থেকে গতকাল ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাতজন গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে বলেছেন এই সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আসায় ও গ্রেপ্তারের পর বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠনের পাঁচজনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।