বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রায়হান তার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল দেখে যেতে পারলেন না। শহীদ রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজী বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেন ও আমেনার ছেলে। তিনি রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার তার এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই পরীক্ষায় রায়হান উত্তীর্ণ হয়েছেন। খবর বাসসের।
মৃত্যুর পর প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। শহীদ রায়হান শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন কবরে। কিন্তু পৃথিবীতে রেখে গেছেন তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর। শহীদ রায়হানের একমাত্র বোন উর্মি আক্তার জানান, গত ৫ আগস্ট (সোমবার) বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগদান করেন সেই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হন রায়হান। এরপর ৬ আগস্ট দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন।
রায়হানের বোন উর্মি আরো জানান, বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রায়হান। রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। সেই পরীক্ষার ফলাফল দুনিয়ার চোখে দেখে যেতে পারলেন না রায়হান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফল জানতে পারে তার পরিবার। রায়হান জিপিএ ২.৯২ পেয়ে উওীর্ণ হয়েছেন। ফল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার পরিবারের সদস্যরা।
উর্মি আক্তার বলেন, আমার ভাই অনেক ভালো ছাত্র ছিল। তার আচরণ কখনো খারাপ ছিল না। তার জন্য বাবা–মা সবসময় কান্নাকাটি করেন। ফলাফল দেওয়ার খবর শুনে বাবা–মা কান্নাকাটি করছেন। আমার ভাই বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন।
রায়হানের মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে বেঁচে নেই, তার এই ফলাফল দিয়ে কী হবে? সে পাশ করছে তা দিয়ে আমরা এখন কি করবো। তার আরও ভালো রেজাল্ট করার কথা ছিল। সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা এখনোও কান্না করছেন। নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাইয়েছি। তাকে ঢাকায় পড়ালেখা করাইছি। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন বুলেটে শেষ হয়ে গেছে।
রায়হানের সহপাঠী মুশফিকুর রহমান সিফাত বলেন, রায়হান মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার তো ভালো ফলাফল পাওয়ার কথা। এবার সব পরীক্ষা হয়নি। তার রেজাল্ট দেখে আমরা মর্মাহত হয়েছি।